রাঙামাটিতে ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-কে সামনে রেখে বর্নাঢ্য র্যালী
পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব সামনে রেখে সোমবার রাঙামাটিতে বর্নাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা তাদের যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব নিরাপদে পালন করতে পারছে না। বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক,অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবী জানান।
বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গনে র্যালীর উদ্বোধন করেন রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা। বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন,রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমা, আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের ছেলে রাজ কুমার ত্রিভূবন আর্যদেব রায়, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা। বক্তব্যে দেন বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার, সাংবাদিক উচিংছা রাখাইন প্রমুখ। অনুষ্ঠান শুরুতে আদিবাসী শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর আদিবাসী নৃত্য পরিবশেন করেন।
পরে পৌর সভা প্রাঙ্গন থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বর পর্ষন্ত একটি বনার্ঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীতে আদিবাসী নারী-পুরুষরা তাদের ঐহিত্যবাহী পোশাকা-আশাক নিয়ে অংশ নেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা উদ্বোধকের বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ভাল নয় উল্লেখ করে বলেন, অভাব অনটনে মধ্য দিয়ে এবং সামনের পরিস্থিতি কি দাড়াতে তা নিয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় আজকে পাহাড়ের আদিবাসীরা চরম নিরাপত্তাহীরতা, উৎকন্ঠায় আশংকায় মধ্য দিয়ে বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু উৎসব উদযাপন করতে হচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা বলেন, পার্বত্য চুক্তির ২০ বছর অতিবাহিত হলেও চুক্তি পূর্নাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। আদিবাসীদের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক, মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি। প্রতিনিয়ত এখানে মানবধিকার লংঘিত হচ্ছে। লংগদুতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দশ মাসেও তাদের ঘরবাড়ি তৈরী করে দেয়া হয়নি। ফলে তারা চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এবং প্রধান সামাজিক উৎসব বর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসু-বিষু-বিহু-চাংক্রান উৎসব শুরু হচ্ছে।