রাইখালীতে জেএসএস নেতা আটক
গতকাল ৩১ মার্চ ২০১৭ ভোরে জনসংহতি সমিতির রাইখালী ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার থোয়াই শৈনু মারমা (৪৭) এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাপ্তাই থানা কমিটির সভাপতি ক্যহিংহ্লা মারমাকে (২৩) রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন ১৯ ব্যাটেলিয়নের ওয়াগ্গা বিজিবি জোনের সদস্য কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়েছে।
জনসংহতি সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সেদিন আনুমানিক রাত ১:০০ ঘটিকায় বিজিবি সদস্যরা কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি মুখ গ্রামের থোয়াই শৈনু ও তার ছেলে ক্যহিংহ্লা মারমার বাড়ি ঘেরাও করে। এরপর তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে বিস্ফোরক দ্রব্য গুঁজে দিয়ে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়। গ্রেফতারের পর প্রথমে ওয়াগ্গা বিজিবি জোনে, এরপরে ডংছড়ি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিকভাবে মারধর করে আহত করেছে। সর্বশেষ রাত ১০:০০ টার দিকে চন্দ্রঘোনা থানায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে সোপর্দ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো ন হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এছাড়া সেদিন আনুমানিক দুপুর ১:০০ টার দিকে বিজিবি সদস্যরা কাপ্তাই উপজেলাধীন ভালুক্যা পাড়ায় জনসংহতি সমিতির রাইখালী ইউনিয়ন কমিটির ভূমি ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এবং রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার রঞ্জিত তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে। বাড়িতে ঢুকে বিজিবি সদস্যরা সিন্দুকের তালা ভেঙ্গে তল্লাসী চালায় ও বাড়ির জিনিসপত্র তছনছ করে। এছাড়া জনসংহতি সমিতির কাপ্তাই থানা কমিটির সদস্য সমীরণ তঞ্চঙ্গ্যার বাড়িও ঘেরাও করে বলে জানা গেছে।
কোন অভিযোগ ছাড়াই বিস্ফোরক দ্রব্য গুঁজে দিয়ে জনসংহতি সমিতির থোয়াই শৈনু ও পিসিপির ক্যহিংহ্লা মারমাকে আইন-বহির্ভূত গ্রেফতারের করায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তীব্র প্রতিবাদ এবং অচিরেই তাদেরকে বিনাশর্তে মুক্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের যোগসাজশে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের উদ্যোগে যত্রতত্র তল্লাসী, জনসংহতি সমিতির সদস্যসহ আন্দোলনরত জুম্মদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো দায়ের, অবৈধভাবে গ্রেফতার ও জেলে প্রেরণ, শারীরিক নির্যাতন, হয়রানি করা ইত্যাদি নিপীড়ন-নির্যাতন জোরদার হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ন্যায্য আন্দোলনকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে পরিচিহ্নিত করা, আন্দোলনরত জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংস করা, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার হীনউদ্দেশ্যে প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের সহযোগিতায় বিজিবি-সেনাবাহিনী-পুলিশ এভাবে জনসংহতি সমিতি ও সমিতির সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জনসংহতি সমিতি মনে করে। এ ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতনের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নি:সন্দেহে অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে যা দেশের সামগ্রিক স্বার্থে কখনোই শুভ হতে পারে না। তাই এধরনের ফ্যাসবাদী দমন-পীড়ন অচিরেই বন্ধ করার জন্য জনসংহতি সমিতি জোর দাবি জানাচ্ছে।