রংপুরের সহিংসতায় দুই মামলাঃ জামাত নেতাসহ ৫৩ জন গ্রেফতার
![](https://ipnewsbd.net/wp-content/uploads/2017/11/23379853_10212140637245139_3809532046688440675_n-1.jpg)
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জামায়াত নেতাসহ ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
রংপুর কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানার দুজন উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মামলাগুলো করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের নেতারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। গঙ্গাচড়ার খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলামসহ পুলিশ ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শুক্রবার সহিংসতা শুরুর আগে জামায়াত-শিবিরের নেতাদের নেতৃত্বে গঙ্গাচড়ার সলেয়াশা এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের সমাবেশ হয়। এতে বক্তব্য দেন জামায়াত-শিবিরের নেতারা।
রংপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ধর্মীয় অবমাননাকর’ বক্তব্য টিটু রায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া হয়েছে কি না, তা এখনো প্রমাণ হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ধর্মীয় বিষয়টিকে আঘাত করে মানুষকে উসকে দেওয়া হয়েছে। যিনি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বলে বলা হচ্ছে, তিনি ১০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থাকেন। ঘটনা ঘটল এক জায়গায়, কিন্তু হামলা হলো তাঁর গ্রামের বাড়িতে। এটি পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবিরের লোকজন ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তি হাবিবুর রহমানও জামায়াতকর্মী।
রংপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ঘর নির্মাণে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ১০টি পরিবারকে তিন হাজার টাকা করে এবং ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। ঘর তৈরির জন্য যা প্রয়োজন, তার সবই দেওয়া হবে। এ ছাড়া সদর ও গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে পাঁচ হাজার করে টাকা এবং হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করেছে। হরিদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাবার দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের আটটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোতোয়ালি, গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাবিবুর রহমান নামের একজন নিহত হন। সহিংসতায় আহত হন পুলিশের সাত সদস্যসহ ২৫ জন। তাঁদের মধ্যে মাহবুবুল নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানান।