জাতীয়

মেলায় আদিবাসী বিষয়ক বইয়ের খোঁজে

জমে উঠেছে বইমেলা । পাঠক লেখকদের পদচারনায় মূখর বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ । যত দিন গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বই প্রেমীদের ভিড় । বাঙালি লেখকদের পাশাপাশি আদিবাসী লেখকদের বই পাওয়া যাচ্ছে মেলায় । মূলত নিজেদের প্রকাশনা থেকেই আদিবাসী লেখকদের বই প্রকাশিত হয়েছে ।
লিটলম্যাগ চত্ত্বরে থকবিরিমের স্টলে দেখা গেল আদিবাসী গারো লেখক মতেন্দ্র মানখিনের গারোদের লোকায়ত জীবনধারা, ফিডেল ডি সাংমা ও লুই সাংমার গারো সংস্কৃতির মাধুর্য, সুমনা চিসিমের গারো জাতির ব্যবহৃত বনজ ঔষধি নীলু রুরামের কবিতার বই অব্যক্ত বেদনা। বিক্রয়কর্মী জানালেন আশানুরুপ না হলেও বিক্রি মোটামুটি হচ্ছে, তার মধ্যে মতেন্দ্র মানখিনের গবেষণা বই গারোদের লোকায়ত জীবনধারা বিক্রি বেশি হচ্ছে । তিউড়ি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বিপম চাকমার ছোটগল্পের বই অজগর । পাহাড়ী মানুষের জীবন, সংগ্রাম গল্পের মূল উপজীব্য ।স্টল ঘুরে জানা গেলো অজগর বিক্রি হচ্ছে ভালোই । তাছাড়া একই প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে গারো লেখক মিঠুন রাকসামের গন্ধচোর , রতন থিয়ামের মনিপুরি ভাষার কবিতা মাইস্নাম রাজেশের অনুবাদে স্বর্ণকমল, মাইবম সাধনের গ্রাফিত্তি ও এ কে শেরামের ছোটগল্পের বই টোকাই কাহিনী ।
সংহতি প্রকাশন থেকে বের হয়েছে প্রশান্ত ত্রিপুরার বিভিন্ন সময়ে লেখা নিবন্ধ সংকলন- জাতিরাষ্ট্রের কিনারায় প্রান্তিকতার খাদ থেকে স্বপ্নের মহাকাশে । বইটাতে প্রান্তিকতার বিশেষ কিছুরুপ ও দিক বর্ণনা-বিশ্লেষন এবং তা কাটিয়ে ওঠার আহবান রয়েছে । এ ছাড়া সংহতি প্রকাশনের স্টলে সাংবাদিক বিপ্লব রহমানের পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ”, সাংবাদিকের জবানবন্দীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অকথিত অধ্যায়; বইটিও পাওয়া যাচ্ছে । সংহতি প্রকাশনের এক বিক্রয়কর্মী বিক্রি কম হওয়ায় কথা বলে হতাশা প্রকাশ করলেন । অন্যদিকে দিব্য প্রকাশের মত ভিন্ন । জিজ্ঞেস করে জানা গেলো বই বিক্রি হচ্ছে অনেক, মেলার শেষদিকে বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করলেন ।
মেলায় ঘুরতে আসা কয়েকজনের সাথে কথা হলো । নিপুন মানখিন বন্ধুদের সাথে মেলায় ঘুরতে এসেছেন । বই কেনার কথা বললে জানালেন তার পরিচিত ছোট বোনের কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে । সেটাসহ পছন্দসই কিছু গারো লেখকদের বই কিনবেন বলেও জানান তিনি । রাজীব হাসান নামে আরেকজন দুহাতে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বই কিনছিলো । কথা বলে জানা গেলো কলেজপড়ুয়া ছেলেটি সাইন্স ফিকশন এর ভক্ত । বিভিন্ন স্টল ঘুরে সাইন্স ফিকশনের বই বাছাই করে কিনছে । মেলায় শিশুদের জন্য
বইমেলায় আসা নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হচ্ছে মুক্ত মঞ্চের পাশে করা একটা ছোট মঞ্চে । প্রতিদিন সেখানে কোন না কোন লেখকের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হচ্ছে । শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা শিশু চত্ত্বর । চত্ত্বরে এসে শিশুরা হালুম, টুকটুকি, ইকরিসহ বিভিন্ন চরিত্রের পরিবেশনা দেখতে পাচ্ছেন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট স্থানে অনেক শিশু একসঙ্গে খেলার সুযোগও পাচ্ছেন। মেলায় বাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় এ চত্ত্বরটি তাই শিশু ও অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত। যেখানে তারা আগ্রহের সঙ্গে উপভোগ করছেন সিসিমপুর শো আর শিশুদের প্রাণবন্ত খেলা। অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রাণ পেয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চ। প্রতিদিনই একাধিক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। বাংলা একাডেমির সহায়তায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সদস্যরা প্রতিদিন এখানে অংশ নিয়ে আসছেন। নাটক মঞ্চস্থ শুরু হয়েছে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে। চলবে মেলার শেষ দিন পর্যন্ত।
মাসব্যাপী এই বই মেলা ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

Back to top button