অন্যান্য

মেডিকেল ভর্তি: ৫ নম্বর কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তির মেধা তালিকা তৈরির সময় দ্বিতীয় বারের পরীক্ষার্থীদের ৫ নম্বর কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত চলতি শিক্ষা বছরের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।

সেইসঙ্গে নম্বর কেটে নেওয়ার ওই সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।

স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নম্বর কেটে নেওয়ার ওই সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে করা একটি রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের অবকাশকালীন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির আবেদন আহ্বান করে গত ২১ অগাস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সেখানে বলা হয়, এমবিবিএস বা বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারীদের সর্বমোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। ওই সিদ্ধান্ত ‘মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি’ অভিযোগ করে ২৭ আগস্ট এই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

রবি ও সোমবার ওই আবেদনের ওপর রিটকারী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই আদালতে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

ইউনুছ আলী শুনানিতে বলেন, “ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারী ছেলে-মেয়েরা সারা বছর লেখাপড়া করেছে, কোচিং করেছে। এখন হঠাৎ করে তাদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক।

“তাদের তো আগে থেকে জানানো হয়নি যে এ বছর থেকে ৫ নম্বর কাটা হবে। আর একই পরীক্ষায় প্রথমবার অংশগ্রহণকারীদের নম্বর ঠিক রেখে শুধু দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারীদের নম্বর কাটা সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত।”

তার যুক্তির বিরোধিতা করে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেন, এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবার যারা অংশগ্রহণ করছে তারা এইচএসসি পরীক্ষার পর মাত্র কয়েক মাস পড়ালেখার সময় পায়। কিন্তু দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারীরা অতিরিক্ত প্রায় এক বছরের বেশি সময় প্রস্তুতি নিতে পারে। এটা প্রথমবার অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈষম্য।

বিচারক এ সময় বলেন, “মিস্টার আ্যাটর্নি জেনারেল। অনেক বছর ধরে চলে আসা একটি নিয়ম হঠাৎ বদলে ফেলা যায় না। বদলে ফেলতে হলে তা একটা নির্দিষ্ট সময় আগে জানিয়ে দিতে হবে। এখানে তা করা হয়নি। মাত্র কয়েক মাস আগে একটা নতুন সিদ্ধান্ত দিয়ে দেবেন তা কি করে হয়?

“দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরাতো জানতো তারা আগের নিয়মেই এবছর পরিক্ষা দেবে। এখন হঠাৎ তাদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে নেওয়া হলে তারা বঞ্চিত হবে।”

এরপর আদলত রুল জারি করে পাঁচ নম্বর কেটে নেওয়ার আদেশ স্থগিত করে দেয়।

Back to top button