মহান শিক্ষা দিবসে চট্টগ্রামে পিসিপি’র ছাত্র সমাবেশ ও মিছিল
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বিকাল ৩:৩০ ঘটিকায় সকল প্রকার সরকারী চাকরিতে ও দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠাে ৫% শিক্ষা কোটা চালু করা এবং সকল আদিবাসী মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করাসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রামে চেরাগী পাহাড় মোড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যৌথ উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র সমাবেশে পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চাকমার সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি হ্লামিও মারমা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পিসিপি চবি শাখার সভাপতি অন্তর চাকমা,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সুদীপ্ত চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি টিকলু দে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক উকিংসাই মারমা।
উকিং সাই মারমা বলেন, পাহাড়ে প্রাথমিক ক্ষেত্রে শিক্ষার অবকাঠামোকে ধ্বংস করে রাখা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকের চরম সংকটের ফলে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিনি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই আদিবাসীদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে ৫% আদিবাসী কোটা পূর্ণবহাল রাখাসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।
সুদীপ্ত চাকমা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে বাণিজ্যিকীকরণ করে শিক্ষা ব্যবস্যা করা হচ্ছে। যে দেশের ছাত্ররা নিজের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য জীবন দিয়েছিল সেই দেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন ভাষাভাষী ১৪টি জাতিগোষ্ঠী নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার বৈষম্যকে দূরীকরণ করে সুষ্ঠু গণমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন এবং আদিবাসীদের সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা পূর্ণবহালের দাবী জানাই।
টিকলু দে বলেন, পাহাড়ে আদিবাসীরা শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনও অনেক পিছিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে ভয়াবহ দূরাবস্থা দেখে বোঝা যায় সেখানকার আদিবাসীরা সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত। আজ ৬২তম শিক্ষা দিবসে এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানাই শিক্ষা বৈষম্য দূর করে আদিবাসীদের সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা নিশ্চিত করে স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
অন্তর চাকমা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও শিক্ষাকে একটি গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুরাবস্থার মধ্য দিয়ে রাখা হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে আদিবাসীরা সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় সেখানে আদিবাসীদের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানাই।
অশোক সাহা বলেন, বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। পাহাড়ে অর্থনৈতিক,সামাজিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করে আদিবাসীদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। মানবিক বাংলাদেশ গড়তে সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে স্ব স্ব অধিকর নিশ্চিত করতে হবে।
হ্লামিও মারমা’র সভাপতিত্বে ছাত্র সমাবেশ শেষে চেরাগী পাহাড় মোড় হতে মিছিল বের হয়ে প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে চেরাগী মোড়ে এসে সমাপ্ত হয়।