শিল্প ও সংস্কৃতি

ভাঙ্গো ভাঙ্গো ঘুম ভাঙ্গোরে ভাঙ্গো

ভাঙ্গো ভাঙ্গো ঘুম ভাঙ্গোরে ভাঙ্গো
জাগো জাগো প্রাণ জাগরে জাগো…।।

মধুপুরের শালবনের ভেতরে কাকরাগুনি গ্রামে এই জাগরণী গান করছিল মৃত্তিকার শিশু কিশোররা। নতুন প্রাণের উচ্ছাসে, নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর শিশু কিশোররা বৃস্টি উপেক্ষা করে জড়ো হয়ে জানালো শেকল ভাঙ্গার আহ্বান। বৃস্টি যেন তাদের গানেই তাল দিয়ে সংগ দিচ্ছিল।

১৬ জুন শুক্রবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাকড়াগুনি গ্রামে গারো সংস্কৃতির সংরক্ষক ও নাট্যকার প্রয়াত নিশিকান্ত মাজির বাড়িতে ‘মৃত্ত্বিকা’ জাতিতাত্ত্বিক লোকায়ত জ্ঞান ও সংস্কৃতি পাঠকেন্দ্র’র উদ্যোগে মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্র পরিচালিত নিয়মিত আয়োজন ‘প্রাণের টানে পথে প্রান্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মৃত্তিকা জাতিতাত্ত্বিক লোকায়ত জ্ঞান ও সংস্কৃতি পাঠকেন্দ্র’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি শাওন রূগার সঞ্চালনায় আসরের শুরুতে আচিক গান, আচিক ছড়া এবং বাংলা জাগরণী গান পরিবেশন করে মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্রের শিশু-কিশোররা। এরপর কাকড়াগুনি গ্রামের শিশু-কিশোররা পরিবেশন করে আচিক ছড়া ও আচিক গান। পরে আবারো মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্রের শিশু-কিশোররা আসর মাতায় সেরেনজিং, এ্যাকশন সং ও একটি চাকমা ভাষার গান গেয়ে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন(বাগাছাস) ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি অলিক মৃ শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন।
তিনি মধুপুরে আদিবাসীদের টিকে থাকার লড়াই সংগ্রাম সম্পর্কে কথা বলেন। অলিক মৃ বলেন, পীরেন স্নাল আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারী শহীদ হয়েছেন। তার রক্তের বদলা রক্ত দিয়ে নয়, বুদ্ধি দিয়ে নিতে হবে। শিশু-কিশোরদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদেরকে পড়াশোনা করতে হবে। বই পড়তে হবে। শুধু পাঠ্য বই না, অন্যান্য বই পড়তে হবে। বড় স্বপ্ন দেখতে হবে।
মধুপুরের বর্ষীয়ান আদিবাসী নেতা জেরোম হাগিদক প্রয়াত নিশিকান্ত মাজি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। নিশিকান্ত মাজি বাংলাদেশ বেতারে ‘সালগিত্তাল’ অনুষ্ঠানে আজিয়া করতেন, গারো গল্প ও নাটক লিখেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। নতুন প্রজন্মদের নিয়ে এই রকম আয়োজনের প্রশংসা করে আয়োজকদের অভিনন্দন জানান জেরোম হাগিদক। আসরে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক দীপ্তি দত্ত।

বরাবরের মতো এই আসরে নেতৃত্ব দিয়েছেন মৃত্তিকা সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রধান, কন্ঠশিল্পী জাদু রিছিল। তাকে সহযোগিতা করেছেন পূর্ণিমা নকরেক, লিজা নকরেক, পান্তু সিমসাং প্রমুখ।

Back to top button