আঞ্চলিক সংবাদ

বিলাইছড়িতে ভান্তের সাথে বিরোধের জেরে বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদত্যাগ

রাঙামাটির বিলাইছড়িতে ভান্তের সাথে বিরোধের জের ধরে পদত্যাগ করেছেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও হেডম্যান সমূল্য তঞ্চগ্যা। শনিবার সংবাদ মাধ্যমে এক যৌথবিবৃতি দিয়ে সমূল্য তঞ্চগ্যা ও তার স্ত্রী, দীপঙ্কর ভান্তের কার্যকলাপে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে স্বপরিবারে ভান্তে ও তার অবস্থান করা ফারুয়া ধুতাঙ্গ বৌদ্ধ বিহার বর্জনসহ সভাপতি পদ হতে পদত্যাগ ঘোষণা করেছেন সমূল্য তঞ্চঙ্গ্যা।
জানা গেছে, ধর্মীয় ও ব্যক্তিগত কার্যকলাপ নিয়ে বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এগুজ্জ্যাছড়িতে দীপঙ্কর ভান্তে নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর ব্যাপারে বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সমূল্য তঞ্চগ্যার ছেলে তুফান তঞ্চগ্যা(২৮) তার পরিবার কে জানিয়ে আসছিলো, কিন্তু পরিবার থেকে সাড়া পাচ্ছিলেননা। ভান্তের কার্যকলাপে শ্রদ্ধাশীল হতে না পারায় এক পর্যায়ে পরিবারের অগোচরে আত্মগোপনে চলে যায় সমূল্য তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে তুফান তঞ্চঙ্গ্যা । তার আত্মগোপনের বিষয়টিকে অপহরণ ধারণা করে আশঙ্কা তৈরি হয় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে। বেশ কিছুদিন পর সন্ধান পেয়ে স্বজনদের কাছে অভিমানের বিষয়টি প্রকাশ করে তুফান তঞ্চঙ্গ্যা।
বিবৃতিতে দীপঙ্কর ভান্তের কার্যকলাপকে বৌদ্ধ ধর্মবিরোধী বলে মন্তব্য করে সমূল্য তঞ্চগ্যা বলেন ‘আমি মহামানব গৌতম বুদ্ধের প্রবর্তিত পবিত্র বৌদ্ধ ধর্মের মূলীতি ‘অহিংসা পরম ধর্মের’ প্রতি সব সময় নতশির। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের মূলমত্র মতে দীপঙ্কর ভান্তের সদ্ধর্ম প্রচারে আমি ব্যক্তিগতভাবে অমিল ও গড়মিল অনুভব করছি। তার কার্যকলাপ সম্পূর্ণ বৌদ্ধ ধর্মের মূলমত্রের বিপরীত। তাই কারও কোনো প্ররোচনা ছাড়া স্বজ্ঞানে ও সুস্থ মস্তিস্কে বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে পদত্যাগ করেছি। ২৮ এপ্রিল হতে আমার পরিবার দীপঙ্কর ভান্তের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে এবং তার বিহারে আমরা কেউ যাব না।’
সমূল্য তঞ্চঙ্গ্যার স্ত্রী মন্দুরী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমার ছেলে তুফান কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ বাড়ি হতে এলাকার বাইরে চলে যায়। বিষয়টি এলাকায় অপহরণ বলে প্রচার হয়। আসলে তাকে কেউ অপহরণ করেনি। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আামার ছেলে তুফান তঞ্চঙ্গ্যা দীপঙ্কর ভান্তের কার্যকলাপে শ্রদ্ধাশীল নয়। সে আমাদেরকে বারবার দীপঙ্কর ভান্তের বৌদ্ধ ধর্মের নীতি বিরোধী কার্যকলাপ ত্যাগ করতে বলেছিল। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পরিবারে মতবিরোধ চলে আসছিল। কিন্তু আমরা তার কথায় সাড়া না দেয়ায় সে পরিবারের অগোচরে আত্মগোপনে চলে যায়। এখন আমরা দীপঙ্কর ভান্তের কার্যকলাপ নিয়ে প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে পারায় ছেলে তুফানের মতের সঙ্গে ঐকমত্য হয়েছি বলে বিবৃতে বলেন তিনি।

Back to top button