আঞ্চলিক সংবাদ

বান্দরবানে অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস পালন করেছে পিসিপি

১৫ মার্চ ১৯৯৫ সাল ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলা শাখার প্রথম সম্মেলন। সম্মেলনকে সফল করার জন্য প্রস্তুত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ অন্যদিকে এ সম্মেলনকে বানচাল করার জন্য তৎকালীন স্থানীয় সরকার পরিষদ(বর্তমানে জেলা পরিষদ), প্রশাসন ও বিশেষ মহল, তাদের ছত্রছায়ায় ভূঁইফোড় সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি ঐক্যবদ্ধ হয়। সে দিন বান্দরবানে যেন যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব, প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে । পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল বের করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে শুরু হয় ধস্তাধস্তি, ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া। এ সুযোগে সেটেলার ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীদের উপর হামলা করে এবং উজানী পাড়া, মধ্যম পাড়ায় নিরীহ জুম্মদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এজন্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এ দিনটিকে অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস আখ্যায়িত করে প্রতিবছর পালন করে আসছে। অদ্য ১৫মার্চ ২০১৮ইং ২৩তম অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সকাল ১০:০০ঘটিকার সময়ে বান্দরবান জেলা কার্যালয়ে ” অশুভ শক্তি নিপাত যাক, জুম্ম জাতি মুক্তি পাক, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী সকল অপশক্তি ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থিদের প্রতিহত করুন” এ স্লোগানকে সামনে রেখে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বান্দরবান জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিসিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা প্রুনুঅং মারমার সঞ্চালনায় এবং সভাপতি ছাত্রনেতা অজিত তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক জননেতা জলিমং মারমা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতি বান্দরবান সদর থানার সভাপতি জননেতা উচসিং মারমা, যুব সমিতি বান্দরবান জেলা সভাপতি যুবনেতা মংস্তু মারমা, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি উবাসিং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা সভানেত্রী শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপির জেলা সহ- সভাপতি বিচিত্র তঞ্চঙ্গ্যা, বান্দরবান সরকারি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক বাঅংসিং মারমা প্রমুখ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি জননেতা জলিমং মারমা ১৯৯৫ সালের ১৫মার্চের ঘটনার স্মৃতিমন্থর করে বলেন সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে প্রশাসন হতে আমাদের জানানো হয় একটি ভূঁইফোড় সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদের সম্মেলন আছে, আপনাদের সম্মেলন করা যাবে না, আমরা বলেছিলাম আপনারাতো আমাদেরকে আগে অনুমতি দিয়েছেন, ওদেরকে একদিন পরে করতে বলেন, তারা বললেন হবে না, আমরা বলেছিলাম তাহলে আমাদেরকে পুরাতন রাজবাড়ি মাঠে করতে দেন, তারা বললেন হবে না, অথচ পার্বত্য গণপরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতির কোন কার্যক্রম ছিল না, তাদের উদ্দেশ্যে ছিল আমাদের সম্মেলনকে বানচাল করা, আমরা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আসলাম যেভাবে হোক আমরা সম্মেলন করব, হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সেদিন মিছিলে যোগদান করেছিল। সেদিন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সম্মেলনকে বানচাল করতে কেরানীহাট, সাতকানিয়া, ছন্দনাইশ ও পটিয়া হতে সন্ত্রাসী ভাড়া করে আনা হয়েছিল।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৯৫সালের ১৫মার্চ একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ একটি সাহসীর নাম, সংগ্রামের নাম।পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ আন্দোলন সংগ্রাম করতে জানে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে।কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। ১৫মার্চ আমাদের আন্দোলন সংগ্রামে সাহস দেয়, অনুপ্রেরনা যোগায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শেখায়, আমাদের ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে।সকল অপশক্তি ও অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন সংগ্রামকে জোরদার করতে আরো অধিকতর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

Back to top button