আঞ্চলিক সংবাদ

বাঘাইছড়িতে যুবসমিতির সাবেক সভাপতি ও রোয়াংছড়িতে জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতারের প্রতিবাদ এবং তাদের নি:শর্ত মুক্তির দাবি

গত ৩ নভেম্বর ২০১৭ রাঙ্গামাটি জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার সিজক-দজর এলাকায় লুমপাড়া থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সাবেক সভাপতি ও নিরীহ জুমচাষী অক্ষর চাকমাকে এবং ৩১ অক্টোবর ২০১৭ বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার ভাঙ্গামুড়া কচ্ছপতলী মোড়ের যাত্রী ছাউনি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমলাসেন তঞ্চঙ্গ্যাকে অবৈধভাবে গ্রেফতারের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ৩ নভেম্বর ২০১৭ ভোর আনুমানিক ৪:৩০ টায় বাঘাইহাট সেনা জোনের (১২ ইস্ট বেঙ্গলের) একদল সেনাসদস্য বাঘাইছড়ি সদর ইউনিয়নের সিজক-দজর এলাকায় লুমপাড়ায় তল্লাসী অভিযানের নামে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে এবং কয়েকজন এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করে নির্যাতন করে। জানা যায় যে, সেনা সদস্যরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে এলাকাটি ঘেরাও করে পরিত্যক্ত একটি জুমঘরে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এ সময় সেনা সদস্যরা দজর এলাকার লুমপাড়া থেকে অক্ষর চাকমা (২৬) পীং- নিলেন্দ্র চাকমাসহ চারজন নিরীহ গ্রামবাসীকে আটক করে। আটকের পর পরই সেনা সদস্যরা অক্ষর চাকমার ব্যাগে একটি দেশীয় পিস্তল গুঁজে দেয়। এ সময় অক্ষর চাকমা প্রতিবাদ করলে তাকে এক সদস্য জোরে চড় ও লাথি মারে। আটকের কিছুক্ষণ পর অপর তিনজনকে ছেড়ে দিলেও অক্ষর চাকমাকে প্রথমে দজর বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে অমানুষিকভাবে মারধর করে। তারপর বাঘাইহাট সেনা জোনে নিয়ে গিয়ে সেখানে নির্যাতন করে বলে জানা যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে সেনা সদস্যরা গুঁজে দেয়া পিস্তলসহ অক্ষর চাকমাকে বাঘাইছড়ি থানায় সোপর্দ করে।

অপরদিকে গত ৩১ অক্টোবর ২০১৭ গাছের ব্যবসা কাজে বান্দরবার জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার পাগলাছড়া পাড়ার কমলাসেন তঞ্চঙ্গ্যা অপর তিনজন সঙ্গী নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে বান্দরবানে গিয়েছিলেন। দুপুরের দিকে একজন সঙ্গী নিয়ে কমলাসেন তঞ্চঙ্গ্যা বান্দরবানের মোঃ ফরিদ সওদাগর নামে জনৈক ব্যবসায়ীর সাথে কাঠ ব্যবসা সংক্রান্ত কাজ সেরে নিজ বাড়ি রোয়াংছড়ি উদ্দেশ্যে ফিরে আসার পথে সন্ধ্যা ৬.০০ ঘটিকার সময় রোয়াংছড়ি কাছাকাছি ভাঙ্গামুড়া নামক যাত্রীছাউনিতে টহলরত একদল সেনা আটক করে। সন্ধ্যায় ৭.০০ ঘটিকার দিকে রোয়াংছড়ি সাব-জোন কমান্ডার মেজর সালাহউদ্দিন এসে তাঁর গাড়িতে উঠিয়ে বান্দরবানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে রাতভর মারপিট করে বলে জানা যায়। ২০১৬ সালের জুনে সংঘটিত মংপু মারমাকে অপহরণ মামলার সাথে মিথ্যাভাবে জড়িত করে তারপর দিন ১ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে বান্দরবান সদর থানায় সোপর্দ করে।

অস্ত্র গুঁজে দিয়ে কিংবা কোন মামলায় মিথ্যাভাবে জড়িত করে এরূপ অবৈধ আটক এবং ফ্যাসীবাদী দমন-পীড়ন অচিরেই বন্ধ করার জন্য এবং অক্ষর চাকমা ও কমলাসেন তঞ্চঙ্গ্যাকে অচিরেই নি:শর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য জনসংহতি সমিতি জোর দাবি জানাচ্ছে।

Back to top button