শিল্প ও সংস্কৃতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরিতে ফেঁসে যাচ্ছেন এক শীর্ষ কর্মকর্তা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরির ঘটনায়  ফেঁসে যাচ্ছেন ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে থাকা এক কর্মকর্তা।সিআইডির তদন্তে তেমনি প্রমাণ মিলতে যাচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন

মঙ্গলবার মতিঝিল থানায় মামলা করা হয়েছিল এই অর্থ চুরির ঘটনায়। মামলা করার পরপরই শীর্ষ ওই কর্মকর্তার ছত্রচ্ছায়ায় থাকা ৪ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে গোয়েন্দারা।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার পরামর্শেই নিয়োগ দেয়া হয় রাকেশ আস্তানার নামের ওই আইটি প্রতিষ্ঠানকে। শুধু তাই নয়, তার ছত্রচ্ছায়াতেই সেখানে একটি দুর্নীতি পরায়ণ গোষ্ঠি সংঘবদ্ধ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, অনেকেই বিস্মিত হলেও সদ্য নিয়োগ পাওয়া ওই আইটি কনসালটেন্টের মৌখিক পরামর্শে সব বিভাগ, সেল, ইউনিট, উইং এবং শাখা অফিসের কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও সার্ভারের সরবরাহকৃত সিকিউরিটি প্যাচ নামের সার্ভার ইনস্টল করা হয়। এর মাধ্যমেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সব তথ্য ফাঁস হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিয়ম অনুযায়ী, রিজার্ভ থেকে যে কোনো লেনদেনের তথ্যের ম্যাসেজ জেনারেট করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফ্রন্ট অফিসের এক কর্মকর্তা। ভেরিফাই করেন একই অফিসের আরেক কর্মকর্তা। আবার মেসেজ ট্রান্সশিপমেন্ট করেন একই বিভাগের আরেক কর্মকর্তা। আর মিডল অফিসের দুই কর্মকর্তা ফ্রন্ট অফিসের মেসেজ যথাযথ হয়েছে কিনা, তা তদারকি করে থাকেন।

রিজার্ভ ম্যানেজমেন্টের জন্য এ দুই অফিস নিয়ন্ত্রণ করে ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টের বিভাগ। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাক অফিস। এ ব্যাক অফিস ফ্রন্ট ও মিডল অফিসের কাজগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কিনা বা পাঠানো বার্তা অনুযায়ী ঠিকমতো রিজার্ভ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কেটে রাখা হয়েছে কিনা, দেশের রিজার্ভ কী পরিমাণে রয়েছে এগুলো দেখাশোনা করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত বাংলাদেশের হিসাব থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছে। এর একটি অংশ (২০ মিলিয়ন) গেছে শ্রীলঙ্কায়, আরেকটি অংশ (৮১ মিলিয়ন) গেছে ফিলিপাইনে। সম্প্রতি ফিলিপাইনের একটি ইংরেজি দৈনিকে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইনে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।

প্রশ্ন উঠেছে, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার আগে থেকেই কেন ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের ডিলিং রুমের দুটি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বিকল ছিল? যার ফলে ওই ঘটনার সময় ডিলিং রুমে কারা ছিল, সুইফট কোড ব্যবহার করে কারা কাজ করছিল- তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আব্দুল্লাহেল বাকী।

Back to top button