জাতীয়

বাংলাদেশের সংবিধান আদিবাসীদের দূরে ঠেলে দিচ্ছেঃ সন্তু লারমা

আইপিনিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের সংবিধান আদিবাসীদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি শ্রী জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা। ১৭ই নভেম্বর ঢাকাস্থ সিবিসিবি সেন্টার আসাদ গেইট এ বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের দু’দিন ব্যাপী ৪র্থ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। উক্ত সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতীয় কমিটির ৭৫ জন সদস্যের মধ্যে ৬৫ জনেরও অধিক জাতীয় কমিটির সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি শ্রী জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবীন রাজনীতিবিদ শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সাবেক মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ্রী রাণা দাস গুপ্ত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
img_0698উদ্বোধনী বক্তব্যে শ্রী জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা আরও বলেন, বাঙ্গালী জাত্বাভিমান সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে। নির্মম বাস্তবতা হলো- বাংলাদেশে প্রগতিশীল রাজনীতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন চলছে। নাসিরনগর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন ঘটনা সরকারের প্রকৃত মুখোশ উন্মোচিত করে।
দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক হামলা ও আদিবাসী উচ্ছেদের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে অ্যাডভোকেট রাণা দাস গুপ্ত বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জিত হলেও আদিবাসীদের ওপরে নিপীড়ন বঞ্চনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই বঞ্চনা লাঘবের লক্ষ্যে এম এন লারমা যে পথ দেখিয়ে গেছেন, একমাত্র তাঁর পথ ধরেই আদিবাসীদের অধিকার আদায় সম্ভব।
img_0661সম্মেলনের সফলতা কামনা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকার করা একটি রাষ্ট্রের মহান দায়িত্ব। রাষ্ট্র যদি তা পালনে ব্যর্থ হয় ইতিহাস তা ক্ষমা করবেনা।
আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের সাথে একাত্বতা জানিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, এ দেশের আদিবাসীদের ওপরে যে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে তাঁর অবসান না হএ দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবেনা।
উক্ত সম্মেলনে জাতীয় কমিটির মধ্য থেকে সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পাঁচজনকে সভাপতি মন্ডলীর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উপস্থানের পরে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং সামগ্রিক প্রতিবেদন পেশ করেন। সামগ্রিক প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ফোরামের প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহন ও তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের সমস্যা তুলে ধরেন। আলোচনায় সারা দেশে আদিবাসী ভূমি দখল, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের সাঁওতালদের উচ্ছেদ, মধুপুর গড়ে রিজার্ভ ফরেস্ট ঘোষণাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের নানান বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
সম্মেলনে প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামে কার্যক্রম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে পাহাড় ও সমতল আদিবাসীদের ঐক্য , লড়াই ও সংগ্রাম জোরদার করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Back to top button