বাংলাদেশের বিব্রতকর হারঃ ক্ষমা চেয়েছেন মুশফিক
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯০ রানে মুশফিকুর রহিমের দলকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৩৩৩ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ খেলতে পেরেছে কেবল ৩২.৪ ওভার।
ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি। পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি নেই একটিও। উইকেটে পড়ে থাকার মানসিকতা দেখা যায়নি কারোর মধ্যে। কোনো ব্যাটসম্যানই খেলতে পারেননি দায়িত্ব নিয়ে। ৪১ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছে চন্দিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
এদিকে বাংলাদেশের এই বিব্রতকর হারে হতাশ বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহমান। ম্যাচ শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেছেন, “আমাদের ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যার কথা যদি বলেন, অবশ্য হতাশাজনক। সত্যি বলতে কি, অধিনায়ক হিসেবে আমি নিজেই ভুলে গেছি বাংলাদেশ শেষ কবে এমন ব্যাটিং করেছে। একশ রানের নিচে শেষ কবে অলআউট হয়েছি নিজেও মনে করতে পারছি না। খুবই খারাপ লাগছে।”
তিনি আরও বলেন, “হারারও অনেক ধরন আছে। অবশ্যই ম্যাচ বাঁচানো খুব কঠিন হত। কিন্তু অন্তত দুইটা সেশন খেলার মতো সামর্থ্য তো আমাদের আছে। সেদিক থেকে বলব, অধিনায়ক হিসেবে, ব্যাটসম্যান হিসেবে খুব হতাশ। খুবই খারাপ লাগছে। এভাবে হারতে হবে কখনও ভাবিনি। এই হারের জন্য আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি।”
আগের দিনই বিদায় নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও ইমরুল কায়েস। ৩ উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে সোমবার সেনওয়েস পার্কে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার মর্নে মর্কেল ছিলেন না চোটের জন্য। অনভিজ্ঞ বোলিং লাইন আপকে সামলানো তুলনামূলক সহজ ছিল। কিন্তু ম্যাচ বাঁচানোর ধারে কাছে যেতে পারল না বাংলাদেশ।
সবচেয়ে বড় ভরসা মুশফিকুর রহিম ফেরেন সবার আগে। আগের দিন ১৬ রান করা অধিনায়ক কোনো রান যোগ করতে পারেননি। কাগিসো রাবাদার বাড়তি বাউন্স সামলাতে না পেরে ফিরেন হাশিম আমলাকে ক্যাচ দিয়ে।
মর্কেলের অনুপস্থিতিতে বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া রাবাদাই শেষ করে দেন বাংলাদেশের সব আশা। মুশফিকের পর ফিরিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ ও লিটন দাসকে।
প্রথম ইনিংসে অর্ধশতক পাওয়া মাহমুদউল্লাহ ফিরেন বোল্ড হয়ে। উইকেটের পিছনে দারুণ সময় কাটানো লিটন বিবর্ণ উইকেটে সামনে। রাবাদার ফুল লেংথ বলে ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
রাবাদার তিন উইকেটে বাংলাদেশের পরাজয় সময়ের ব্যাপারে পরিণত হয়। সাব্বির রহমানের সামর্থ্য ছিল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর। দলের দ্বিতীয় ইনিংস আরেকটু বড় করার। হতাশ করেছেন তিনিও, সুইপ খেলতে গিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।
ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে যা একটু লড়াই করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একটি করে ছক্কা-চারে অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নেন মহারাজ।