ফরিদপুরের সংখ্যালঘু পাড়ার সাত স্থানে আগুন
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ও ডুমাইন ইউনিয়নের সাতটি জায়গায় আগুন দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গোয়ালঘরে, বাড়ির বারান্দায় এবং সড়কের পাশের পাঠখড়ির পালায়। অগ্নিসংযোগের বেশির ভাগ স্থানের পাশে রয়েছে দুর্গাপূজার মণ্ডপ।
এলাকাবাসী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির লোকজন আগুন টের পেয়ে জেগে ওঠে এবং আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। যোগ দেয় মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।
আগুনে ডুমাইন ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের নীলকমল কীর্ত্তনীয়ার গোয়ালঘরটি পুড়ে গেলেও গবাদিপশু রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। পশ্চিম আড়পাড়া গ্রামের অনন্ত সরকারের বাড়ির সামনে বারান্দায় পুরোনো কাপড় এনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে ঘরে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এ ছাড়া ডুমাইন ইউনিয়নের গড়িয়াদহ, নিশ্চিন্তপুর, লক্ষ্মীপুর, ভেল্লাকান্দি এবং আড়পাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম আড়পাড়া গ্রামে মোট পাঁচটি জায়গায় পাঁচটি পাটখড়ির পালায় আগুন দেওয়ায় সেগুলো পুড়ে গেছে।
মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান চৈতন্য সমাদ্দার বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমরা ডুমাইনের লক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে নীলকমল কীর্ত্তনীয়ার বাড়ির আগুন ছাড়াও দুটি পাঠকড়ির পালার আগুন নেভাই।’
আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, রাতে পাশাপাশি দুটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পাটখড়ির পালায় ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনা ঘটেছে। আজ্ঞাত কিছু লোক এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা যায়। এটি নাশকতা বলা যায়। তিনি বলেন, এর ফলে প্রায় এক লাখ টাকার পাটখড়ি পুড়ে গেছে।
ডুমাই ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বলেন, ‘সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তৎপর কোনো মহলের নাশকতার কাজ হতে পারে এটি। তবে এ ঘটনায় আমরা সতর্ক হয়েছি। এলাকার সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছি।’
মধুখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘আমি প্রতিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সাতটি জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটেছে। সামনে পূজা, তাই ভীতি সৃষ্টির জন্যও এ কাজ করা হতে পারে। পুলিশ তদন্ত করছে। তবে এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকেরাও কাজ করছেন। পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর ইসলাম বলেন, ওই দুটি ইউনিয়নের নিরাপত্তা জেরাদার করা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ দল টহল দিচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।