প্রাইভেট কারের চাপায় আদিবাসী তরুণীর মৃত্যুতে ফেসবুকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া
সতেজ চাকমা: গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে প্রাইভেট কারের চাপায় পপি ত্রিপুরা (২৬) নামে এক আদিবাসী তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাদের নিজস্ব বয়ানে ফেসবুকের ওয়ালে পোষ্ট দিয়েছেন।
নিহতের আপন ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র জয়ন্ত ত্রিপুরা নিকোলাসের হৃদয় বিদারক ফেসবুক পোষ্টটি এই প্রতিবেদকের নজর কাড়ে। দেখা যায় তাঁর এই আবেগঘন পোষ্টটি শেয়ার দিয়েছেন সহস্রাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী।
তিনি তাঁর পোষ্টে বলেছেন, ”দিদি ওরা তোমাকে বাঁচতে দিলো না” । তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে এও বলেও যে, ‘তোমার আদৌ সুবিচার হবে কি না জানি না।’ অন্যদিকে একই ফেসবুক পোস্টে তিনি তাঁর আপন বোন পপি ত্রিপুরাকে চাপা দিয়ে যাওয়া গাড়িটির নম্বর প্রকাশ করেছেন যার নম্বর ছিল- “ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩-০৯০২”।
নিহতের আপন ভাই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে আরো বলেন, “কই আসামিকেতো গ্রেফতার করা হলো না, গাড়ির নাম্বার জানা সত্বেও। কই কোন নিউজ চ্যানেলেতো (পপির মৃত্যু সংবাদ) হেডলাইন হলো না। কেন ?”
বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী এবং জাবির সাবেক শিক্ষক প্রশান্ত ত্রিপুরা তাঁর এক ফেসবুক স্টেটাসে জয়ন্ত ত্রিপুরার স্টেটাসকে উদৃত করে বলেন, ‘জয়ন্ত বা তার মতো অনিরাপদ সড়কে প্রাণ হারানো কোনো স্বজনের এমন প্রশ্নের সদুত্তর কি আমরা কেউ দিতে পারব ?’
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা তাঁর ফেসবুক পোষ্টের এক পর্যায়ে লিখেছেন, Today (October 19) in the early morning while the freezing van carrying the lifeless body of poppy ( popy Tripura) from Dhaka was passing through bandarban town on way to Thanchi Anamika (wife of Bikram) and I paid homage. We could hardly hold our tears. What an untimely death! What a waste!”
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুর রহমান সায়েম এই তরুণীর মৃত্যুসংবাদ সংবলিত এক অনলাইন নিউজ শেয়ার করে নিজ ফেসবুক প্রোফাইলের ওয়ালে লিখেছেন, “সবাই মানুষ, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাহলে এ ব্যাপাওে ভ্রুক্ষেপ নাই কেন সমাজের?’
আহমেদ আমান মাসুদ নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাঁর এক স্টেটাসের শেষে এ ঘটনার সুবিচার চেয়ে লিখেছেন, ‘আমরা আশা করবো গুলশান থানার পুলিশ সেই কাজটাই (আসামী চালককে গ্রেফতার) করবেন। অতি দ্রুত দোষী গাড়ি আর গাড়ির চালকের সন্ধান করে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির সাজা নিশ্চিত করবে।’
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এখনো ঘাতক চালককে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি এবং গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায় । তবে ঐ ঘটনায় উল্লিখিত প্রাইভেট কারটি ‘রেন্ট কার কোম্পানি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বলে জানা যায় এবং সেটি পুলিশ কর্তৃক মোহাম্মদপুর থেকে জব্দ করা হয়েছে এবং উক্ত গাড়িটি পার্কিং করে ঘাতক চালক পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।