পূর্ণা হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে চট্টগ্রামে মিছিল সমাবেশ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলাধীন দিঘীনালা উপজেলায় নয় মাইল এলাকায় গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী কৃত্তিকা ত্রিপুরা ধর্ষন ও ধর্ষনের পর হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পিসিপিʼর বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৩১শে জুলাই ২০১৮ইং রোজ মঙ্গলবার বিকাল ৩ঘটিকায় সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম মহানগর ও পাহাড়ী শ্রমিক কল্যান ফোরামের উদ্যেগে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা উপজেলায় নয় মাইল এলাকায় গুচ্ছগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী কৃত্তিকা ত্রিপুরা (পুণাতি) ধর্ষন ও ধর্ষনের পর হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম চেরাগী পাহাড় মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক কৃতি চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সংগ্রামী সভাপতি শ্রী মিলন চাকমা।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক সুপ্রিয় চাকমা।
উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক শাখার সভাপতি সুরেশ চাকমা, সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের টমেশ ত্রিপুরা,এবং আরো বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মিন্টু ত্রিপুরা,
সহ-সাধারন সম্পাদক শ্রাবণ চাকমা,বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এর চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম মহানগর সংসদ এর সাংগঠনিক সম্পাদক এনি সেন,পাহাড়ী শ্রমিক কল্যান ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পূ্র্ন বিকাশ চাকমা ও সাধারন সম্পাদক ডিসান তঞ্চঙ্গ্যা,পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক অনুজ চাকমা এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক মংয়ইচিং মারমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন কৃত্তিকা ত্রিপুরা একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি মাত্র নয় বছরের শিশু।দুপুরে স্কুল বিরতির পর বাড়িতে খাবার খেতে যাওয়ার সময় কৃত্তিকাকে চাঁরজনের একদল সেটলার বাঙালী তাকে দেখে ঝিরিতে নিয়ে ধর্ষন ও ধর্ষনের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।এধরনের ন্যাকারজনক ঘটনা ঘটার কারনে আমাদের জুম্ম মা বোনরা বর্তমানে অফিস আদালতসহ স্কুল-কলেজে ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপদ নয় বলে জানান। বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন পার্বত্য জেলাগুলোতে দিনে দুপুরে মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়। শিশু থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ সব বয়সের নারীদেরই ধর্ষনের মতো জঘণ্য ঘটনা হয়। ধর্ষণের শিকার হয়ে আদিবাসীরাই কোনো সুষ্ঠু বিচার দাবি জানাতে গেলে তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বাধা প্রদান হতে শুরু করে হয়রানির শিকার হতে হয় । সমতল থেকে বহিরাগত সেটলার বাঙালীরা পাহাড়ে গিয়ে পাহাড়ের ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন হয়ে উঠেছে দিনে দিনে!
এসব ঘটনার কোন বিচার হয় না। আজৌ কি সেই সুষ্ঠু বিচার পাবে কিনা তা সন্দেহীন হচ্ছে। উল্টো এসব ঘটনায় বিচারের দাবীতে আন্দোলন বা ধর্মঘট করলে আদিবাসীদের ওপর হামলা চালানো হয়,তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়,জুমের পাহাড় পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া হয়,কখনও হয়তো তরুণ নেতাদেরই তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য কোথাও! পাহাড়ের অবস্থা দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, পাহাড়ে বসবাসরত সেটলার বাঙালীরা ও শাসকগোষ্ঠীরা এই আদিবাসী মানুষগুলোর সাথে যা করছে, এরকমটাই বোধহয় ১৯৪৭-১৯৭১ সালের মধ্যে পাকিস্তানীরা করেছিল আমাদের এদেশবাসীর সাথে। পাহাড়ে শাসকগোষ্ঠীরা হানাদার হয়ে উঠছি কিনা,এটা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
বক্তারা এইও বলেন পার্বত্য চুক্তি না হওয়ায় এধরনের ন্যাকারজনক ঘটনা ঘটতে চলেছে এজন্য পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো অতি দ্রুত যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।