আঞ্চলিক সংবাদ

পিসিপি’র তিন ছাত্রনেতার দ্রুত ও নি:শর্ত মুক্তি ও সেনাশাসন প্রত্যাহার চেয়ে পিসিপির মিছিল

আইপিনিউজ রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির যক্ষাবাজার সেনাক্যাম্পে সেনাবাহিনী কর্তৃক অন্যায়ভাবে আটককৃত পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, জুরাছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রুপন চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুরেন চাকমা এবং তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রনি চাকমার দ্রুত ও নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার বিকালে রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক রনেল চাকমার সঞ্চালনায় ও সভাপতি জিকো চাকমা সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চাকমা। সমাবশে আরও বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক যুবনেতা সুমিত্র চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ম্রানু মারমা। এর আগে পিসিপি’র জেলা শাখার কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বনরুপা বাজার প্রদক্ষিণ করে ডিসি অফিসে প্রাঙ্গণে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুগে যুগে যেখানে অন্যায় হয়েছে, নিপীড়ন হয়েছে ছাত্র সমাজই তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। আজকে জুম্মরা রাস্তায় নেমেছে অস্তিত্বের জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বললে আজ সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে। কিন্তু সন্ত্রাসের চাষ করে সেনাবাহিনী। আজকে শুভলং কিংবা জীবতলিতে তারাই সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়।

বক্তারা আরও বলেন, নিজের মতামত প্রকাশ করার, সভা সমাবেশ ও রাজনৈতিক করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের সংবিধান সিদ্ধ। সংবিধান প্রত্যেক নাগরিক রাষ্ট্রের ইতিবাচক দিককে যেমন প্রশংসা করার অধিকার রাখে, তেমনি রাষ্ট্রের মন্দ নেতিবাচক দিককে সমালোচনা করার অধিকার রাখে। সংবিধানের অধিকার চর্চা করতে গিয়ে সেনাবাহিনী পিসিপির তিন নেতাকে আটক করেছে যা সংবিধান পরিপন্থী। আসল সন্ত্রাসীদের পুষে রেখে জনগণের উপর হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতন চালাচ্ছে তারাই। সেনা প্রশাসন দ্বিমুখী আচরণ করে চলেছে। এটা কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চরিত্র হতে পারে না।


বক্তারা জুরাছড়ির তিন ছাত্র নেতা রুপম, সুরেন ও রনি চাকমাদের দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তিসহ, পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক সেনা অপারেশন উত্তোরণ নামে সেনাশাসন প্রত্যাহার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত ও যথাযথ সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা জিকো চাকমা প্রশাসনের নিকট ৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিসমূহ—
১। অনতিবিলম্বে প্রথম ধাপের (৮ মে ২০২৪) নির্বাচনের পূর্বে জুরাছড়িতে গ্রেফতারকৃত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের তিনজন ছাত্রকে বিনাশর্তে মুক্তি প্রদান করা।
২। ছাত্রদেরকে অবৈধভাবে গ্রেফতারের সাথে জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিধান মোতাবেক ‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প অচিরেই প্রত্যাহার করা।
৪। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সুষ্ঠু রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।

সমাবেশ শেষ করে পিসিপির একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের অবর্তমানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তিন ছাত্রনেতার মুক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।

Back to top button