পার্বত্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিনা অনুমতিতে ছবি ব্যবহারে শিল্পীর ক্ষোভ ও নিন্দা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজু, সাংগ্রাই,বিষু, বৈসু, বিহু, চাংক্রান-১৮ উপলক্ষে প্রকাশিত পোস্টারে বিনা অনুমতিতে ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহারের অভিযোগ ও পোস্টার দ্রুত প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন শান্তি দেবী তঞ্চঙ্গ্যা। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান তিনি। বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের পোস্টারে ফুল ভাসানোর যে ছবিটি উপস্থাপন করেছেন সেটি শান্তি দেবীর তঞ্চগ্যার একান্ত ব্যক্তিগত ছবি। ছবিটি ব্যবহারের আগে ফটোগ্রাফার এবং তার কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি নেয়া হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এহেন কর্মকান্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টারে ব্যবহৃত ‘বৈসাবি’ শব্দ নিয়েও আপত্তির কথা জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এটিকে বৈষম্যমূলক শব্দ অভিহিত করে বলা হয়, ‘বৈসাবি’ শব্দটিতে মাত্র তিনটি আদিবাসী জাতিসত্তার(সরকারের ভাষ্যমতে) উৎসবের কথা উল্লেখ আছে। বস্তুত পাহাড়ে ভিন্ন ভাষাভাষি চৌদ্দটি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। উক্ত শব্দটিতে অন্য সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের উৎসবের কথা না থাকায় স্বভাবত এটি জুম্মদের কাছে পরিচিত নয় এবং গ্রহণযোগ্যতাও নেই। পাহাড়ে ‘বৈসাবি’ নামে কোন সামাজিক উৎসবও নেই।’ এই শব্দটি জুম্মদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপর আঘাতের প্রতীক এবং নিজস্ব স্বকীয়তাকে লুকিয়ে দেয়ার নীল নকশার অংশ এবং এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ছবিটি পোস্টারে প্রকাশ হওয়ায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্নতার শিকার হচ্ছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন শান্তি দেবী । পোস্টারে তাকে বিজ্ঞাপনের পণ্যের মত উপস্থাপন করা হয়েছে, তা একজন নারীর অধিকারকে খর্ব করেছে, যা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। শান্তি দেবী তঞ্চগ্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ার আহবান জানিয়ে, দ্রুত পোস্টার প্রত্যাহার করে, বিনা অনুমতিতে ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায়, সংবিধান মোতাবেক আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন বলেও জানান তিনি।