জাতীয়

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত নয় তারা চুক্তির সুফল ভোগ করছে- সন্তু লারমা

রাঙামাটি প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত নয় তারাই চুক্তির সুফল ভোগ করছেন। তারা চুক্তির বিরোধীতা করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়, তিন পার্বত্য (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) জেলা পরিষদের দিকে তাকালে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি (জেএসএস) ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের পথিকৃত সাবেক সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ (এমএন) লারমার ৩৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটি জেলা জেএসএস কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন হয়েছে। কিন্তু এসব অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে যারা দায়িত্বে আছেন তারা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সাথে যুক্ত নয়। তারা চুক্তি বিরোধী ভুমিকা পালন করে।
সন্তু লারমা আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তি করেছে। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন যে না হয় সে জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চুক্তি বিরোধী সংগঠন তৈরি করে রেখেছে। এসব চুক্তি বিরোধীরা চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত তাদের হত্যা করে চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করছে। এসব ষড়যন্ত্রকারীরা এমএন লারমার হত্যার সাথে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তারা তাদের অনুসারী।
সন্তু লারমা বলেন, পাকিস্তান সরকার কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে পার্বত্যাঞ্চলে জুম্ম জনগণের যে বিপর্যয় সে বিপর্যয়ের পরিণতি এমএন লারমা হৃদয়ের গভীরে গিয়ে অনুভব করেছিলেন। শুধু এটি নয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জুন্ম জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক যে বিপর্যয় চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল এসবের প্রতিবাদ করেছিলেন এমএন লারমা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়। এমএন লারমা স্মৃতিচারণ করে দেবাশীষ রায় বলেন, ১৯৬০ সালে কর্ণফুলীতে বাঁধ দেওয়ার এমএন লারমা প্রতিবাদ করেছিলেন। সে সময় তার মত মানুষ যদি আরো বেচে থাকত তাহলে কাপ্তাই বাঁধ হতে পারত না। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের যে করুণ অবস্থা তা হত না।
অনুষ্ঠানে জেএসএস রাঙামাটি সভাপতি সুবর্ণ চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মংসানু চৌধুরী, শিশির চাকমা, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চলের আহবায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির নেত্রী কল্পনা চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশের আগে সকাল ৮ টায় রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি এলাকার শিল্পকলা একাডেমী থেকে প্রভাত ফেরী শুরু হয়। প্রভাত ফেরীটি বনরূপা পেট্রোল পাম্প ঘুরে এসে শিল্পকলা এসে শেষ হয়।
এরপর এমএন লারমার স্মৃতিস্তমে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লারমা। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এমএন লারমার স্মৃতিস্তমে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন।

Back to top button