জাতীয়

পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর উপর ধর্ষণ নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে : মানববন্ধনে বক্তারা

পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর উপর ধর্ষণ নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারনে ধর্ষণের ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা ব্যর্থ, এই রাষ্ট্র ব্যর্থ হচ্ছে ধর্ষকদের শাস্তি দিতে। খাগড়াছড়িতে আদিবাসী কিশোরী গণধর্ষণ এবং লামায় ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করে রাষ্ট্র ধর্ষণ নিপীড়নের পথ খুলে দিচ্ছে। যে প্রশাসন নারীর নিরাপত্তা দিতে পারেনা, সে প্রশাসনের প্রয়োজন আছে কিনা এ নিয়ে আজ গভীর প্রশ্ন উঠছে।’
তিনি আর বলেন, ‘মানবতার চরম লাঞ্ছনা দিয়ে কিসের উন্নয়ন? ইট সুড়কির আমরা চাইনা। জনসংখ্যার অর্ধেক নারীদের আতঙ্কিত, ভীতসন্ত্রস্ত রেখে যে উন্নয়ন তার উপর আমাদের কোন আস্থা নেই।’

আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্য জান্নাত-ই-ফেরদৌসী বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে দেশের অন্যান্য জায়গার চেয়ে নারী ধর্ষণ নিপীড়নের মাত্রা বেশি। সেখানে কেবল ধর্ষণ করছে তাই নয়, ধর্ষণের পর খুন করাও হচ্ছে। পেশাদার ধর্ষকেরা পাহাড়ে পাহাড়ে ধর্ষণ করছে।’

আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘যদি নারী নিপীড়িত হয়, আর তা যদি সংখ্যালঘু নারী হয় সে ক্ষেত্রে বিচার পাওয়া দুঃস্বপ্নের মতন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ সরকার রাষ্ট্র তার নাগরিকদের দেখতে পাচ্ছেনা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

‘একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে আমরা দেখতে পাচ্ছি কিন্তু সেগুলোর বিচার হচ্ছেনা। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের মত ধর্ষণেও জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করা হোক’ বলে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিনিধি জনা গোস্বামী।

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার বলেন, ‘রাষ্ট্র নানানভাবে ধর্ষকদের প্রণোদনা দিয়ে চলেছে। সরাসরিভাবে ধর্ষকদের পক্ষ নিচ্ছে এই রাষ্ট্র। এই সরকার, তার বিচার বিভাগ চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।

মানববন্ধন থেকে খাগড়াছড়িতে আদিবাসী কিশোরী গণধর্ষণ ও লামায় ধর্ষণের পর হত্যায় অভিযুক্তদের শাস্তি, ঘটনার শিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, নারী নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন, পার্বত্য মন্ত্রনালয়ে নারী নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ সেল গঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনিরা ত্রিপুরার পরিচালনায় বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের ফাল্গুনী ত্রিপুরারা সভাপতিত্বে মানববন্ধন সমাবেশে দাবিনামা পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পক্ষে শাহনাজ সুমি। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে ঢাকা মহানগর শাখার সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জাহিদ হাসান, কাপেং ফাউন্ডেশনের সোহেল হাজং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরি প্রমূখ।

Back to top button