জাতীয়

নেতারা অনশন ভাঙলেনঃ সাধারণ শিক্ষকদের চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি ভঙ্গ করা নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে তার হাতে শরবত পান করে শিক্ষক নেতারা অনশন ভঙ্গ করলেও কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষকরা। সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটেছে।

নেতারা অনশন ভঙ্গ করলেও শিক্ষকদের একটা বড় অংশ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অনশনরতরা বলছেন, মন্ত্রী বলেছেন, যৌক্তিক হলে দাবি মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু আমরা আশ্বাস নয়, সুস্পষ্ট ঘোষণা চাই। এ রকম আশ্বাস ২০১৪ সাল থেকেই আমরা শুনে আসছি। হয় প্রধানমন্ত্রী না হয় শিক্ষামন্ত্রী এসে ঘোষণা দিলে আমরা কর্মসূচি থেকে সরে যাবো।
এর আগে শহীদ মিনারে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নয়, অলোচনার টেবিলেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আপনাদের দাবির কোনমাত্রার যৌক্তিকতা আছে, তা প্রমাণ করতে পারলেই দাবি মেনে নেওয়া হবে।’

মন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর আন্দোলনর শিক্ষকরা বলতে থাকেন, ‘আমরা মানি না, মানবো না। আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এসময় শিক্ষক নেতা নাসরিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। মন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আন্দোলন বন্ধ নয়, স্থগিত করেছি। যদি দাবি মানা না হয়, আমরা আবারও ফিরে আসবো।’

প্রসঙ্গত, গত তিন দিনের টানা অনশনে প্রায় ৬০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পার্শবর্তী কয়েকটি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ৬০ জনের মধ্যে অন্তত ২০ জন নারী শিক্ষক।

অনশনকারী শিক্ষকরা জানান, ১৯৭৩ সাল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০০৬ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান বেড়ে যায় ধাপ। পরে ২০১৪ সালে এই ধাপ আরও বেড়ে যায় তিনটি। প্রধান শিক্ষকদের গ্রেড উন্নয়ন করলেও সহাকারি শিক্ষকদের গ্রেড এক ধাপও বাড়ানো হয়নি।

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে গত শনিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেড ((মূল বেতন ১০ হাজার ২০০ টাকা) পান। অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকরা পান ১০ম গ্রেড (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)।আন্দোলনকারী শিক্ষকরা তাদের বেতন গ্রেড প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে ১১তম গ্রেড (১২ হাজার ৫০০ টাকা) নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এতে মহাজোটের অধীনে থাকা ১০টি সংগঠনের শিক্ষকরা অংশ নিচ্ছেন। বেতন বৈষম্য নিরসনের জন্য ২০১৪ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষকরা।

Back to top button