জাতীয়

নির্বাচন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য আতঙ্কের : হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নির্বাচন আতঙ্কের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মুসলিম ইন্সটিটিউট হলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, অনেকের জন্য নির্বাচন উৎসবমুখর। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নির্বাচন উৎসবের নয়, আতঙ্কের। অতীতেও নির্বাচনের পর তারা সহিংসতার শিকার হয়েছে।

“আমরা আশঙ্কা করছি, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ২০১৮ সালে বেশি সহিংসতা হবে। এর শিকার হবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। আশঙ্কার কথা বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখিনি।”

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে আমরা বলেছি। এটা তাদেরই নিশ্চিত করতে হবে যেন একটিও সহিংসতার ঘটনা না ঘটে।

রাষ্ট্র ধর্ম সম্পর্কে শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরে কী আমরা যুদ্ধ করেছি স্বাধীন বাংলাদেশে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ রাখার জন্য? এখনো যদি রাষ্ট্রধর্ম থাকে তাহলে পাকিস্তান ভাঙ্গার কী দরকার ছিল?

তিনি আরো বলেন “সবাই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে, কে করছে না? বরং এ নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। মৌলবাদী চেতনা বিস্তারের ক্ষেত্র তৈরি করছেন আর দাবি করবেন মৌলবাদ-সন্ত্রাসবাদ নেই, তা তো হয় না।

প্রধান বক্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাও আছে আবার ধর্মতন্ত্রও আছে। সংবিধানকে হিপোক্রেটিক রূপে রেখে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে প্রচার করা হাস্যকর ও প্রতারণার সামিল।
“৪৭ বছর পর আমরা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছি। কারণ এই দেশে কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আস্থা রাখতে পারছে না।”

রানা দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের দাবি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দুইবার, জাতীয় পার্টির এরশাদ সাহেবের সাথে চারবার এমনকি বাম মোর্চা ও বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলামের সাথেও অলোচনা হয়েছে।

“আমাদের ৫ দফা ও ৭ দফা দলগুলোকে নির্বাচনী ইশতেহারে রাখতে হবে। যে দল রাখবে তাদের ভোট দেব। যদি কেউই তা পূরণে প্রতিশ্রুতি না দেয় তাহলে ভোট বর্জন ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।”

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিষদের পক্ষ থেকে যে পাঁচ দফা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে- সংখ্যালঘু স্বার্থবিরোধী কাজে লিপ্ত কাউকে মনোনয়ন না দেয়া, ৭ দফার পক্ষে নির্বাচনী অঙ্গীকার ঘোষণা, সংসদে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, নির্বাচনের আগে পরে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনের আগেই সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও কমিশন গঠন। এছাড়া পরিষদের পক্ষে জাতীয় ঐক্যমতের ৭ দফা দাবিনামাও পেশ করা হয় মহাসমাবেশে।

পরিষদের বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সাংসদ উষাতন তালুকদার, অতিথি বক্তা ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য, ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. জিনবোধি ভিক্ষু এবং নির্মল রোজারিও।

Back to top button