অন্যান্য

নির্বাচনী ইশতেহারে ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা-এর ওপর ৮টি বিষয় অন্তর্ভূক্তিকরণের দাবি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা -এর ওপর ৮টি সুনির্দিষ্ট বিষয়াবলী অঙ্গিকার হিসেবে দেখার দাবি জানিয়েছে সিভিল সোসাইটি ল্যান্ড নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক-এর মধ্যে যে সংগঠনগুলো রয়েছে তা হলো: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নিজেরা করি, কাপেং ফাউন্ডেশন, উত্তরণ, আম্বালা ফাউন্ডেশন, স্পীড ট্রাস্ট, কারিতাস, আইপিডিএস, সিআরপি ও এএসওডি। নেটওয়ার্ক এর বক্তব্যে আছে, বাংলাদেশের মানুষ ও অর্থনীতির বড় অংশ ভূমি নির্ভর। বাংলাদেশে দারিদ্র্যের সাথে ভূমিহীনতার সর্ম্পক নিবিড়। এদেশের প্রায় ৫৯% খানা ভূমিহীন। দেশের ৮৪% ভূমি মালিক ভূমির মালিকানা স্বত্ত্ব নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আইনগত বিরোধে জড়িয়ে রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে ভূমি-সংক্রান্ত চলমান আইনি জটিলতা চরম আকার ধারণ করেছে। এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ, বাড়ছে বহুমাত্রিক নির্যাতন ও হয়রানি। ভূমি প্রশাসনের সনাতনী পদ্ধতি, নানা স্তরে মালিকানা প্রমাণ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত ডাটাবেইসের অভাব, ভূমি জরিপ কার্যক্রমে আধুনিক প্রযুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি ব্যবহার না করা, নামজারির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভূমি অফিসগুলোর মধ্যে সমম্বয়হীনতা দিনের পর দিন ভূমি মালিকানার নিরাপত্তাকে হ্রাস করছে। ভূমি অধিগ্রহণ, হুকুম দখল, খাস জমি বিতরণে অনিয়ম, জলমহাল বরাদ্দে অব্যবস্থাপনা, সরকারী ভূমি ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে দেশের অধিকাংশ মানুষ ভূমি অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে যে ৮টি বিষয়াবলী বাস্তবায়নের অঙ্গিকার প্রতিশ্রুতি হিসেবে এ নেটওয়ার্কটি দেখতে চেয়েছে, তা হলো:

১.বর্তমান ভূমি আইন, ভূমি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনে বিদ্যমান দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠি ও নারীর প্রতি যেসকল বৈষম্য রয়েছে তা অধিকার ভিত্তিক পন্থায় নিরসনে অগ্রাধিকার প্রদান করা;

২.খাস জমি/জলমহল ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালায় সাংঘর্ষিক ধারা, প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূর করা ও নারীদের খাস জমি/জলমহলে প্রবেশাধিকারে অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা;

৩.ভূমি প্রশাসনকে সমন্বিত করে ‘ভূমি মন্ত্রণালয়’-এর অধীনে আনা, যাতে নাগরিকরা মাঠ পর্যায়ে ‘ওয়ান ষ্টপ সার্ভিস’ পায়;

৪. আদিবাসীদের ভূমি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে অবিলম্বে সমতলের আদিবাসীদের জন্য ‘ভূমি কমিশন’ গঠন করা এবং পার্বত্য অঞ্চলের ‘ভূমি কমিশন’কে কার্যকর করা;

৫. ভূমি বিরোধ নিরসন, মামলার জটিলতা হ্রাস ও মালিকানা স্বত্ত্ব নিরাপদ করার জন্য ভূমি ডিজিটাল কার্যক্রমকে ত্বরাম্বিত করা;

৬; স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য ‘ভূমি অধিগ্রহণ’ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি;

৭. নিয়মিত দিয়ারা জরিপ-রের্কড ও চর্চা নকশা প্রদান প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত ও অংশগ্রহণমূলক করা এবং অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তির কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

Back to top button