সাক্ষাৎকার

নিজস্ব সত্ত্বা ও মূল্যবোধই আদিবাসী সংস্কৃতির শক্তিশালী দিক: একান্ত সাক্ষাতকারে কবি শিশির চাকমা

৯ই আগস্ট, আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আইপিনিউজ এর সাথে এক একান্ত আলাপচারিতায় কবি শিশির চাকমা তার লেখালেখির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন সুলভ চাকমা। আইপিনিউজের পাঠকদের জন্য নাতিদীর্ঘ এই আলাপনটি প্রকাশিত হল।

আইপিনিউজ:
আপনার শৈশব কোথায় এবং কীভাবে কেটেছে? আপনার শিক্ষাজীবন এবং কর্মজীবন সম্পর্কে বলুন।

শিশির চাকমা:
আমার শৈশব রাঙ্গামাটিতেই কেটেছে।লেখপড়া রাঙ্গামাটিতেই। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে। বসন্ত জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। ১৯৮৮ সালে মোনঘর উচ্চবিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। ২০২৩ সালের জুন মাসে এ প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে গিয়েছি।

আইপিনিউজ:
কখন থেকে আপনি সাহিত্য চর্চা শুরু করেছিলেন। বর্তমান কি নিয়ে লিখছেন? আপনার প্রকাশিত লেখা/গ্রন্থ সমূহ সম্পর্কে যদি কিছু বলেন।

শিশির চাকমা:
কলেজে পড়ার সময়েই লেখা লেখি চর্চা শুরু।আমি নিয়মিত লিখতে পারিনা। মাঝেমধ্যে দু একটি কবিতা বা গদ্য লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ একটি।

আইপিনিউজ:
কার কার লেখা পড়ে আপনি লেখালেখির ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা খুঁজেছেন?

শিশির চাকমা:
অনেকের লেখাই আমাকে লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে।


আইপিনিউজ:

সাহিত্য চর্চা ক্ষেত্রে আপনি কোন কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়েছেন?

শিশির চাকমা:
আমি পাহাড়ের মানুষ। পাহাড় আর বনের ভূমিজ পুত্র আমি। পাহাড়ে জুমিয়া মানুষের জীবন কাছ থেকে দেখেছি। কাপ্তাই বাধেঁর ফলে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কষ্ট দেখেছি। অবহেলিত বঞ্চিত ও অধিকার হারা মানুষের হাহাকার দেখেছি।তাদের জীবন সংগ্রাম দেখেছি।মূলতঃ এ বিষয়গুলোর প্রতিই আমার ভীষন দুর্বলতা।

আইপিনিউজ:
আপনি দীর্ঘ সময় ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জাতিসমুহের ভাষা- সাহিত্য – সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছেন। আপনার দৃষ্টিতে আদিবাসীদের ভাষা – সাহিত্য – সংস্কৃতির বিশেষত্ব কি?

শিশির চাকমা:
পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন জাতিসমুহের বসবাস। তাদের স্ব স্ব ভাষা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, সত্তা ও মূল্যবোধ। এ মূল্যবোধই মূলতঃ তাদের সংস্কৃতির শক্তিশালী দিক ও বিশেষত্ব।

আইপিনিউজ:
জুম ঈসথেথিক কাউন্সিল (জাক) একসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাষা – সাহিত্য – সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে ব্যপক সুনাম অর্জন করেছিল। আপনি জুম ঈসথেথিক কাউন্সিলের শুরুর দিকের সংগঠকদের একজন হিসেবে আমরা জানি। জাক প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু বলুন? জাক এর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম বা সাফল্য কী কী?

শিশির চাকমা:
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোর ভাষা,সাহিত্য ও সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা,প্রচার ও বিকাশের লক্ষে জাক গঠন করা হয়েছিল ১৯৮২ সালে। প্রতিষ্টা কাল থেকে প্রকাশনা,কর্মশালা, নাটক,আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা ও গুণীজন সংবর্ধনা সহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সাফল্য ও ব্যর্থতার কথা অন্যরাই বলবে।

আইপিনিউজ:
আপনি পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাথেও কিছুদিন যুক্ত ছিলেন। এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছু বলুন। পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের কি কি বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে?

শিশির চাকমা:
হ্যাঁ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাথে প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই যুক্ত আছি। লেখকরা সমাজের একটি শক্তিশালী সচেতন অংশ। লেখকদের একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম গড়ার লক্ষে লেখক ফোরামের জন্ম। সময়ের প্রয়োজনে লেখকদের ঐক্যবদ্ধ থেকেই অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

আইপিনিউজ:
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ভাষা – সাহিত্য – সংস্কৃতির বিকাশে কী কী সমস্যা রয়েছে?


শিশির চাকমা:

সমস্যাতো অনেক । ভাষা,সাহিত্য ,সংস্কৃতির ও মধ্যে দিয়েই একটি জাতির আত্ন পরিচয় ঘটে। সুতরাং এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি রক্ষা এবং বিকাশের জন্য আমাদেরকেই কাজ করতে হবে।

আইপিনিউজ:
আদিবাসীভাষা-সাহিত্য- সংস্কৃতি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদেরকে কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়?

শিশির চাকমা:
প্রতিবন্ধকতা তো থাকবেই। সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেই এগোতে হবে।

আইপিনিউজ:
পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈচিত্র্যময় আদিবাসী ভাষাসমূহ এবং সাহিত্য প্রাচুর্য কীভাবে সংরক্ষিত এবং বিকশিত হতে পারে?

শিশির চাকমা:
ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন মিলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

Back to top button