আঞ্চলিক সংবাদ

ধর্ষন ও হামলার বিচারের দাবিতে মাভাবিপ্রবিতে মানববন্ধন

রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ওরাছড়ি গ্রামে তল্লাশির নামে অস্ত্রের মুখে রাতের আধারে সেনাবাহিনী কর্তৃক দুই মারমা কিশোরী ধর্ষন এবং চাকমা রানী ইয়ান ইয়ান এর উপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের “মাভাবিপ্রবি আদিবাসী ছাত্র সংগঠন” কর্তৃক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়! মানববন্ধনে সাধারণ আদিবাসী শিক্ষার্থী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ও প্রগতিশীল বাঙালী ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ।

সংগঠনের অর্থ সম্পাদক সজীব ভৌমিক এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ভাগ্য জীবন চাকমা এবং সংগঠনের সিনিয়র উপদেষ্ঠা মনস্বী প্রসাদ চাকমা!এছাড়াও শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সাইন্স বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান মো: জহিরুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন-আদিবাসী নারী ধর্ষন এটা নতুন কিছু নয়। আদিবাসী নির্যাতনের একটি বিরাট ইতিহাস রয়েছে!আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতনের শিকার!পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটি একটি রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বক্তারা বলেন-“বাংলাদেশের আদিবাসীরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে!”পার্বত্য চট্টগ্রামে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীকে উস্কে দিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা এবং গণহত্যা ও নারী ধর্ষণের মাধ্যমে জাতিগত নির্মূলীকরণের প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়ন করতে চলেছে উগ্র জাতীয়তাবাদী মহল! বক্তারা উদাহরণ টেনে বলেন ১৯৪৭ সালের ৯৮% জনসংখ্যাকে আজ ৪৯% এ নামিয়ে এনে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামের জনমিতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে! এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৫০ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা বাঙালী অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত হবে আশংকা প্রকাশ করেন বক্তারা।

বাংলাদেশের কোথাও আজ নারী এবং শিশুরা নিরাপদ নয় উল্লেখ করে বলেন “দ্রুত বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে রাষ্ট্রকে বেড়িয়ে আসতে হবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির বিধান করতে হবে!তারা বলেন দেশের আদিবাসী নারীরাই আজ সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে!

দেশের এক তৃতীয়াংশ সামরিক বাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে রেখে সামরিক কায়দায় বাংলাদেশ উপনিবেশিক শাসন বজায় রেখেছে তিন পার্বত্য জেলায়!

সমাবেশ থেকে বক্তারা দ্রুত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন সহ সকল আদিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানান!পার্বত্য চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীদের অপকর্মের বিরুদ্ধে বক্তারা বলেন-

“নিরাপত্তা বাহিনীই যখন নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তখন নিরাপত্তা চাওয়ার আর কোন কর্তৃপক্ষ আদিবাসীদের থাকেনা!”

এমতাবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রাম যদি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায় তার দ্বায়ভার রাষ্ট্রকেই নিতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন-পার্বত্যবাসী দেশনেত্রী শেখ হাসিনার শাসন চাই,সামরিক শাসন চাইনা!আর সামরিক শাসনের কারণে যদি পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার অশান্ত হয়ে ওঠে তার দ্বায় নিতে হবে রাষ্ট্রকেই!

পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণের মাধ্যমে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে মানববন্ধন শেষ হয়!

Back to top button