ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
জুম্ম জাতীয়তাবাদের অগ্রদূত, শোষিত-নিপীড়িত মানুষের নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা বিশ্ব্বিদ্যালয় শাখা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলস্থ অস্থায়ী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক স্মরণসভা ও পুষ্পার্জ্ঞ্য অর্পণ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র অশোক চাকমার সঞ্চালনায় ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অমর শান্তি চাকমার সভাপতিত্বে স্মরণসভার শুরুতে প্রয়াত নেতার স্মৃতিতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপরে মহান নেতার স্মরণে তার জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নবাংশু চাকমা, জিনেট চাকমা, কিংশুক চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম লিটারেচার এন্ড কালচারাল সোসাইটির সভাপতি এডিট দেওয়ান, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক রেংইয়ং ম্রো, সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সুলভ চাকমা ঢেঙা প্রমুখ।
বক্তারা প্রয়াত নেতার স্মরণে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘুণে ধরা সামন্তীয় সমাজব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়ে শোষণহীন, শ্রেণিহীন সমাজ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে তিনি জুম্ম জাতীয়তাবাদের চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩ ভাষাভাষি ১৪ টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে একীভূত করে স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে সামনে থেকে বলিস্থভাবে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কথা বলেননি, তিনি সমগ্র বিশ্বের নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের কথা বলতেন।
তারা আরো বলেন, “Simple living, High thinking” ছিল তার ব্যক্তিগত জীবনের অন্যতম নীতি। তিনি একাধারে ছিলেন আইনজীবি, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সংগঠক ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা। তিনি বলতেন, ক্ষমাগুণ, শিক্ষা গ্রহণের গুণ ও পরিবর্তিত হওয়ার গুণ ব্যতীত প্রকৃত বিপ্লবী হওয়া যায়না। বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে এ গুণগুলোকে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
অধ্যয়ন, অনুশীলন, বাস্তবায়ন এ তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়াত নেতা পার্বত্য চট্টগ্রামের গ্রামে গ্রামে শিক্ষা বিস্তারের কাজে নেমেছিলেন। “শিক্ষা গ্রহণ করো আর গ্রামে ফিরে চলো” মহান নেতার এ স্লোগানকে ধারণ করে বর্তমান তরুন প্রজন্মকেও অবশ্যই পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীকে সচেতন করার কাজে নেমে পরতে হবে
নসেৎ মহান নেতার শ্রেণিহীন, শোষণহীন সমাজ গড়ার স্বপ্নও স্বপ্নই থেকে যাবে বলেও বক্তারা আলোচনা করেন।
পরিশেষে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহান এ নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে স্মরণসভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।