শিল্প ও সংস্কৃতি

ঢাকায় প্রথমবারের মতন উদযাপিত হল গারোদের ঐতিহ্যবাহী রংচুগালা

আইপিনিউজ ডেস্কঃ ঢাকায় প্রথমবারের মতন উদযাপিত হল গারোদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী কৃষিজ উৎসব ‘রংচুগালা’। ঢাকার উত্তরায় বসবাসরত গারো সম্প্রদায়ের সংগঠন উত্তরা বালবামিদ্দিং সোসাইটি এই উৎসবের আয়োজন করে। গত ৮ জুলাই উত্তরার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
গারোদের আদি ধর্মের নাম সাংসারেক। এখন গারো জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ খ্রিস্টিয়ান হয়ে গেলেও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলায় এখনো বেশ কিছু সংখ্যক সাংসারেক ধর্মানুসারী রয়েছে। গারোদের জীবন কৃষিনির্ভর হওয়ায় তাদের সব উৎসবগুলো কৃষিকেন্দ্রিক। সাংসারেক ধর্মের লোকেরা রংচুগালা উৎসবের মধ্য দিয়ে ফসল বোনার জন্য উৎকৃষ্ট বীজ বাছাই করতো। সে বীজ জুম চাষ করে ফসলের পরিচর্যায় মনোযোগী হত। জুমের ফসল ঘরে উঠলেই অনুষ্ঠিত হয় সাংসারেক ধর্মের প্রধান উৎসব ওয়ানগালা।
গারোরা আদি থেকেই বিশ্বাস করতো যে দেবতাকে সন্তুষ্ট করলে ফসলের জন্য ভাল বীজ পাওয়া যায়। আর যেহেতু ভাল ফলনের জন্য ভাল বীজের গুরুত্ব অনেক বেশি তাই এই উৎসব গারোদের কাছে ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে সাংসারেক ধর্মানুসারীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলো আর আগের মতন দেখা যায়না। মধুপুরের কিছু কিছু গ্রামে খুব সীমিতভাবে এখনো এই উৎসবগুলো উদযাপন করতে দেখা যায়।
সকালে খামাল (সাংসারেক পুরোহিত) দিনেশ নকরেকের সাংসারেক মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অতঃপর দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী গারো নাচ গানসহ ছিল বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা।
13620766_10210302534739314_6990865503524821869_n
আয়োজকরা জানান, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই ‘রংচুগালা’র সাথে পরিচিত নন। এই সম্পর্কে সম্যক ধারনা প্রদান ও নগর জীবনের চর্চায় ঐতিহ্যবাহী গারো জীবনের পরিচিতি আনার উদ্দেশেই তাদের এই ছোট্ট প্রয়াস।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার বিধান ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ খান আদর্শ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা উত্তর যুবলীগের সহ-সভাপতি ডিএম শামীম এবং গারো কমিউনিটি সেন্টারের (নকমান্দি) সমন্বয়ক প্রতাপ রেমা প্রমুখ।

Back to top button