জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের ১৫তম অধিবেশন: কল্যাণকর ভবিষ্যত এবং আদিবাসী, সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের মধ্যে সেতুবন্ধনের লক্ষ্যে আদিবাসী যুব ও নারী সংগঠনসমূহকে সম্পৃক্তকরণের আহ্বান আইপিডিএস প্রতিনিধির
নিউইয়র্ক থেকে পল্লব চাকমা: আদিবাসী যুব ও নারী সমাকের কল্যাণকর ভবিষ্যত গড়ে তোলা এবং আদিবাসী, সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের মধ্যে সেতুবন্ধনের লক্ষ্যে আদিবাসী যুব ও নারী সংগঠনসমূহকে সম্পৃক্তকরণের জন্য আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরাম ও রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইপিডিএস প্রতিনিধি মিস অদ্রি মিত্তিকা সিচিম।
জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামের ১৫তম অধিবেশনে ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের আলোকে স্থায়ী ফোরামের ছয়টি অর্পিত কার্যাবলী’ সংক্রান্ত ৪নং আলোচ্য বিষয়ের উপর ইণ্ডিজিনাস পিপলস ডেভেলাপমেন্ট এণ্ড সার্ভিসেস, কুবরাজ আন্ত:পুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠন ও আদিবাসী নারী এসোসিয়েশনের পক্ষে গত ১২ মে ২০১৬ এক যৌথ বক্তব্যে মিস অদ্রি চিসিম এই আহ্বান জানান। গত ৯ মে থেকে স্থায়ী ফোরামের দু সপ্তাহ ব্যাপী এই ১৫তম অধিবেশন নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘের সদরদপ্তরে শুরু হয়েছে। ২০ মে পর্যন্ত এ অধিবেশন চলবে।
‘জাতিসংঘের সদস্য-রাষ্ট্রসমূহ টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেণ্ডা বাস্তবায়ন শুরু করেছে’ জাতিসংঘের মহাসচিব বান-কি মুনের এই উদ্বোধনী ভাষনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের একজন যুব প্রতিনিধি হিসেবে মিস অদ্রি মিত্তিকা সিচিম বলেন, এই উন্নয়ন এজেণ্ডায় (এসডিজি) আদিবাসীরা যেন ‘পেছনে থেকে না যায়’ তা রাষ্ট্রসমূহকে নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে আদিবাসী সংগঠনসমূহের সম্পৃক্তকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান। নিজেদের প্রকৃত উন্নয়নের নিমিত্তে আদিবাসীরা দেশীয় পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমানভাবে অংশগ্রহণ করতে চায়। এসডিজি বাস্তবায়নে আদিবাসীরা যাতে ফলপ্রসু ও কার্যকর অংশগ্রহণ করতে পারে তার প্রতি সবিশেষ নজর প্রদানের জন্য জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ও প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান মিস চিসিম।
তিনি আরো বলেন, স্থায়ী ফোরামের অর্পিত ছয়টি কার্যাবলী যেমন- অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, মানবাধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও সংস্কৃতি বিষয়ে রাষ্ট্র, আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী ও জাতিসংঘের মধ্যে নিয়মিত সংলাপ ও পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত করা জরুরী। স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতির অধিকার হবে এই সংলাপের মূল অগ্রাধিকার। দেশীয় পর্যায়ে আইএলও, ইউএনডিপি ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলো এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
মিস অদ্রি চিসিম আরো জানান, আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর তাদের চিরায়ত অধিকারের ক্ষেত্রে চরম সমস্যায় মুখোমুখী হয়ে আসছে। আদিবাসীদের কল্যাণে এ ভূমি সমস্যা কিভাবে নৈপূণ্যতার সাথে নিরসন করা যায় সে বিষয়ে এগিয়ে আসতে তিনি রাষ্ট্রগুলোকে আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সমতল আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন যথাযথভাবে সংশোধন করা জরুরী বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।