আঞ্চলিক সংবাদ

চুক্তির দুই দশকঃ রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন উপজেলায় জেএসএস এর মিছিল সমাবেশ

বাঘাইছড়িঃ বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’র ২০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর বাঘাইছড়ি থানা কমিটির উদ্যোগে এক বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল ১০:৪৫ ঘটিকায়। গণসমাবেশে বাঘাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ, পেশা, বয়স নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দাবি ও শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে যোগদান করেন। উল্লেখ্য, ২০ বছরেও পার্বত্য চুক্তির অধিকাংশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় উৎসাহ-উদ্দীপনার পরিবর্তে বস্তুত ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি তীব্র সমালোচনার মধ্য দিয়ে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাঘাইছড়িতে পার্বত্য চুক্তির ২০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বাঘাইছড়ি সদর ইউনিয়ন কমিটির চেয়ারম্যান সুনীল বিহারী চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি কিশোর কুমার চাকমা, জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য ও পিসিপির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বাচ্চু চাকমা, কাচালং ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ দেওয়ান, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুমিতা চাকমা, যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ ত ঙ্গ্যা, পিসিপির রাঙ্গামাটি শহর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুপিয়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য সান্তনা চাকমা প্রমুখ। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনসংহতি সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা এবং সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন দয়াসিন্ধু চাকমা।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি সজীব চাকমা বলেন, সরকারই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করার কারণে এবং চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার কারণে জুম্ম জনগণকে আবার দূরে ঠেলে দিচ্ছে, পার্বত্য পরিস্থিতিকে জটিলতর করে তুলছে। ফলে জুম্ম জনগণের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় পার্বত্য অ লে যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এর জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, সরকারই জুম্ম জনগণের অধিকার, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্বাতস্ত্র্যকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে জুম্ম জনগণকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে এবং বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জুম্ম জনগণ জাতীয় সংহতি চাই বলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন চায়। অথচ সরকার চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না করে, উল্টো নানাভাবে গড়িমসি, চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে নানা অপপ্রচার এবং চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী নানা কর্মকান্ড বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জুম্ম জনগণকে আবার দূরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করছে।
কাচালং ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ দেওয়ান বলেন, নয় মাস যুদ্ধ করে যদি স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি সম্ভব হয়, তাহলে বিশ বছরেও কেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না? সরকার যদি আন্তরিক হতো এই বিশ বছরে এ ধরনের চারটি চুক্তি বাস্তবায়িত হতে পারতো। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত জুম্ম জনগণ কত আশা নিয়ে ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালে, ২০০৮ সালে এই সরকারের নেতৃত্বাধীন দলকেই নিজের সবকিছু সঁপে দিয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে এই সরকারের কোন আন্তরিকতার লক্ষণ নেই। আর সরকারের মিষ্টি কথা শুনতে শুনতে সেই মিষ্টি কথায় জুম্ম জনগণের এখন বড্ড অরুচি সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ আর সরকারের মিষ্টি কথায় বিশ্বাস করে না।
লংগদুঃ চুক্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে লংগদু উপজেলা সদরে প্রথমে সকাল ১০:০০ টায় এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সকাল ১০:৩০ টায় …… গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির লংগদু থানা কমিটির সভাপতি ত্রিলোচন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য উদয়ন ত্রিপুরা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি জুয়েল চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহন চান চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা, যুব সমিতির লংগদু থানা কমিটির সভাপতি তপন জ্যোতি চাকমা, পিসিপি’র লংগদু থানা সভাপতি দয়াল কান্তি চাকমা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনসংহতি সমিতির লংগদু থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিশংকর চাকমা।
গণসমাবেশের প্রধান অতিথি উদয়ন ত্রিপুরা বলেন, ২০ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর খাগড়াছড়িতে অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এখন আর পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাহানি হবে না, আর অশান্তি থাকবে না, পাহাড়িরা জায়গা হারাবে না।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেই কথার সাথে তাঁর বর্তমান বাস্তবতার মিল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আজকে চুক্তির বর্ষপূর্তি পালন সম্ভব হলেও দীর্ঘ বিশ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়নে কোন অগ্রগতি না হওয়ায়, বরং পরিস্থিতি দিন দিন অবনতিশীল হওয়ায় আগামী বছর চুক্তির বর্ষপূর্তি পালন সম্ভব হবে কিনা আশংকা রয়েছে।
পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি জুয়েল চাকমা বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে এবং জনস্বার্থে সড়ক নির্মাণের নামে যেসব কাজ করছে তাতে জনগণের উন্নতি না হয়ে বরং পার্বত্য চট্টগ্রামকে কারাগারে পরিণত করে চলেছে।
বরকলঃ সকাল ১০:০০ টায় বরকল সদর খেলার মাঠে প্রথমে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং গণসমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বরকল থানা কমিটির সভাপতি উৎপল চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক গুণেন্দু বিকাশ চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য শ্যাম রতন চাকমা, সমিতির বরকল থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিধান চাকমা, ১নং সুবলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা, হেডম্যান এসোসিয়েশনের বরকল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নীলাময় চাকমা, পিসিপির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি রিন্টু চাকমা, যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক বিনয় সাধন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির বরকল থানা কমিটির সভাপতি শকুন্তলা চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ও থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিনা চাকমা ও আইমাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমর কুমার চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পুলিন চাকমা এবং সঞ্চালনা করেন সমিতির থানা কমিটির সদস্য জয়ধন চাকমা।
প্রধান অতিথি গুণেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্তরিক নয়। আমরা সরকারকে বিশ্বাস করে চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু সরকার কালক্ষেপণ করে চলেছে। তিনি বলেন, আমরা আর আশ্বাস শুনতে চাই না। আমরা বাস্তবায়ন চাই। তিনি আরও বলেন, জনগণকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তারা আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেই।
জুরাছড়িঃ সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জনগণ মিছিল নিয়ে উপজেলা শিশু পার্ক প্রাঙ্গণে সমবেত হয়। এর পর সকাল ৯:৪৫ টায় উক্ত শিশু পার্ক প্রাঙ্গণে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জনসংহতি সমিতির জুরাছড়ি থানা কমিটির সভাপতি মায়াচান চাকমা এবং সঞ্চালনা করেন একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত চাকমা। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রণতি বিকাশ চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির আহ্বায়ক ভবদত্ত চাকমা, সমিতির জুরাছড়ি থানা কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উদয়জয় চাকমা, সমিতির থানা কমিটির ভূমি ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রনজিত দেওয়ান, যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি টোয়েন চাকমা, মহিলা সমিতির জুরাছড়ি উপজেলা কমিটিে সভাপতি আলপনা চাকমা, বনযোগীছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা, ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যানন চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সুমিত্র চাকমা, ৩৯২নং ভালুক্যাছড়ি মৌজার প্রস্তাবিত হেডম্যান রিপন পাংখোয়া।
গণসমাবেশের প্রধান অতিথি ও জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্রণতি বিকাশ চাকমা সকল স্তরের জনগণকে পার্বত্য অধিবাসীদের অধিকারের সনদ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে অধিকতর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি সাম্প্রতিক কালে পার্বত্য অ লে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নের কথা তুলে ধরে বলেন, সেনাবাহিনী বিদেশের মাটিতে গিয়ে সুনাম অর্জন করেন, তাতে আমরা গর্ববোধ করি। কিন্তু এখানে পার্বত্য অঞ্চলে তারা কেন তল্লাশী, ধরপাকড় ও জনগণকে হয়রানি করবে? এখানে গুটি কয়েক কর্মকর্তার কারণে সামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হবে কেন?
বিলাইছড়িঃ সকাল ৯:০০ টায় উপজেলা সদরে প্রথমে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সকাল ৯:৩০ টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জনসংহতি সমিতির বিলাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি শুভমঙ্গল চাকমার সভাপতিত্বে এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত তঞ্চঙ্গ্যার সঞ্চালনায় এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ধীর কুমার চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য কানন কুসুম তঞ্চঙ্গ্যা, সমিতির বিলাইছড়ি থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীরোত্তম ত ঙ্গ্যা, যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা নান্টু, পিসিপির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন কুসুম তঞ্চঙ্গ্যা, যুব সমিতির বিলাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি সুনীল কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা, মহিলা সমিতির বিলাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি অরুণা দেবী চাকমা, ১নং বিলাইছড়ি ইউনিয়ন কমিটির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান, ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমরজীব চাকমা। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সমিতির বিলাইছড়ি থানা কমিটির ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক অমৃতসেন তঞ্চঙ্গ্যা।
গণসমাবেশের প্রধান অতিথি ধীর কুমার চাকমা সর্বস্তরের জনগণের প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে অধিকতরভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি, সেনা ও পুলিশ বাহিনী কর্তৃক জনসংহতি সমিতির কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশী, ধরপাকড়, আটক এবং হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িত করার ঘটনার সমালোচনা করে অচিরেই তা বন্ধের আহ্বান জানান।
কাপ্তাইঃ উপজেলার বরইছড়ি সওজ কার্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল ১০:২০ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কাপ্তাই থানা কমিটির উদ্যোগে সমিতির থানা কমিটির সভাপতি বিক্রম মারমার সভাপতিত্বে এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য সৌখিন চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির জেলা কমিটির সদস্য নিকোলাই পাংখো, হেডম্যান নেটওয়ার্ক এসোসিয়েশনের কাপ্তাই থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক থোয়াই অং মারমা, সমিতির থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসা অং মারমা, সমিতির রাইখালী ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুইপ্রু মারমা, যুব সমিতির কাপ্তাই উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় ত ঙ্গ্যা, পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক পুলক চাকমা, পিসিপির কাপ্তাই থানা কমিটির দপ্তর সম্পাদক হ্রাংলা মারমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপির কর্ণফুলী ডিগ্রী কলেজ কমিটির সভাপতি অংচিংনু মারমা এবং সমাবেশে সঞ্চালনা করেন জনসংহতি সমিতির থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইমং মারমা।
সমাবেশের প্রধান অতিথি সৌখিন চাকমা, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন তো করছেই না, উল্টো চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছে বলে অভিযোগ করেন এবং বিশ বছরেও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করার কারণে পার্বত্য পরিস্থিতি আবার পূর্বের মতই জটিল আকার ধারণ করেছে বলে উল্লেখ করেন।
রাজস্থলীঃ সকাল ১০:৩০ টায় রাজস্থলী বাজার এলাকায় প্রথমে পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এরপর সকাল ১১:০০ টায় রাজস্থলী বাজার মাঠে এক গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। জনসংহতি সমিতির রাজস্থলী থানা কমিটির সভাপতি পুলুখই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য চাথোয়াই মারমা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ক্রয়সুই মারমা, জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য তাপস চাকমা, সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সদস্য মনি রঞ্জন ত্রিপুরা, সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য পিপলস মারমা, পিসিপির রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি দীপেন চাকমা, পিসিপির রাজস্থলী উপজেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক ধনবান তঞ্চঙ্গ্যা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক ¤্রানু মারমা। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির রাজস্থলী থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ ত ঙ্গ্যা বাচ্চু এবং সঞ্চালনা করেন সুশান্ত প্রসাদ তঞ্চঙ্গ্যা।

Back to top button