অন্যান্য

চট্টগ্রামের রাউজানে জুম্ম নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও রাঙ্গামাটিতে জুম্ম নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে পিসিপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

ঢাবি প্রতিনিধি: পাহাড়ের জুম্ম নারী ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের দৃষ্টন্তিমূলক শাস্তির দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে । পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর শাখা এ আয়োজন করে ।বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে গিয়ে সমাপ্ত হয় । এরপর হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী মনিরা ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এবং পিসিপি’র ঢাকা মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক নিপুন ত্রিপুরার পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য ব্যবিলন চাকমা । এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ- সাধারন সম্পাদক জিনেট চাকমা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি নুমংপ্রু মারমা প্রমুখ ।

স্বাগত বক্তব্যে ব্যবিলন চাকমা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ডজনের কাছাকাছি জুম্মনারী ধর্ষণ এবং অনেকেই ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন। কিন্তু এগুলোর একটিরও যথাযথ বিচার হয়নি।বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি চলমান তাকার ফলে এ ঘটনাগুলো সংঘটিত হচ্ছে অনবরতভাবে ।
সংহতি বক্তব্যে জিনেট চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম নারী ধর্ষণের ঐতিহাসিক বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যায় সংঘটিত ঘটনাগুলোর একটিরও যথাযথ বিচার হয়নি । বর এ ঘটনাগুলোর পেছনের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পাহাড়ের আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যেই রাষ্ট্রশক্তি ধর্ষকদের এবং ধর্ষনের পর হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে ।

নুমংপ্রু মারমা তীব্র ক্ষোভ ও আক্ষেপ নিয়ে বলেন ,বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৭ বছর পরও এ দেশের সমাজ এ ধর্ষণ নামক জিনিসটি থেকে মুক্ত হতে পারেনি কিন্তু আমরা অন্ধভাবে উন্নয়নের মন্ত্র দিয়ে সভ্য হচ্ছি বলে দাবী করছি ।তিনি চট্টগ্রামের রাউজানে মারমা নারী ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোড় দাবী জানান ।

সভাপতির বক্তব্যে মনিরা ত্রিপুরা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যতদিন পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা না হবে ততদিন পর্যন্ত এ সহিংসতার বিচার হবে না এবং এ ঘটনাগুলো ক্রমাগত ঘটতেই থাকবে এবং অন্ধ প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই ।উল্লেখ্য যে, বিগত ৫ জুলায় রোজ বৃহস্পতিবার অংমেচিং মারমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা করে পুকুর থেকে ডুবিয়ে রান্নাঘরের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ৯ জুলাই রোজ সোমবার সকালে রাঙামাটির কাউখালীতে সেটলার বাঙালী কর্তৃক ২৫ বছর বয়সী এক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়।জানা যায়, কাউখালী বাজারের সাপ্তাহিক হাটবার হওয়ায় কলমপতি ইউনিয়নের বড়ইছড়ি গ্রামের দুই সন্তানের জননী ওই নারী বাজার থেকে ফেরার পথে সকাল পৌনে ১১টার দিকে কাশখালী ও বটতলীর মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছলে একা পেয়ে কাশখালীর আব্দুল বারেক-এর পুত্র মোঃ শাকিব(১৮) তাকে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ঘটনাটি কাউকে না জানানোর হুমকি দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ওই নারী বাড়িতে এসে ঘটনাটি তার স্বামীকে জানায়।উক্ত ঘটনায় ভিকটিম কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং-২১৯। পুলিশ ভিকটিমকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য রাঙামাটি সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।

Back to top button