আন্তর্জাতিক

গুয়ামের ৫০০ বছরের ইতিহাস

উত্তর কোরিয়া জুলাইয়ে দুইটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে দেশটির ওপর নতুন করে কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত দ্বীপ ‘গুয়ামে’র কাছে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দিলেও আপাতত তা স্থগিত করেছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে হঠাত্ করেই আলোচনায় উঠে এসেছে ‘গুয়াম’। গুয়াম সম্পর্কে নতুন করে কৌতুহল জন্ম নিয়েছে মানুষের মনে।

মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম ও সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ গুয়াম। জাতিসংঘের অর্ন্তভুক্ত ১৭টি অ-স্বশাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি গুয়াম। ১৯৪৬ সাল থেকে এটি জাতিসংঘে অর্ন্তভুক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত দ্বীপ ‘গুয়ামে’র বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। তবে এখানে মানুষের বসবাস শুরু হয়েছিল প্রায় চার হাজার বছর আগে। তখন গুয়ামে বসতি স্থাপন করেছিল চামোরো নামের আদিবাসী গোষ্ঠী। তবে কালের ধারাবাহিকতায় বারবার গুয়াম শাসিত হয়েছে বর্হিশক্তির হাতে। পাঁচশ বছর আগে ১৫২১ সালে স্প্যানিশ জাহাজ ‘ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান’ প্রথম এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। মূলত জাহাজের ক্লান্ত আর ক্ষুধার্ত নাবিকরা খাবারের খোঁজে এখানে তখন আশ্রয় নিয়েছিলেন। এরপর প্রায় ৩০০ বছর ধরে সেখানে স্পেনের শাসন অব্যাহত ছিল। স্পেনের কলোনি হিসেবে থাকা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গুয়াম একসময় আমেরিকানদের অধীনে চলে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান এবং মার্কিন নৌবাহিনীরে মধ্যে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল গুয়ামে। বারবার বর্হিশক্তির শক্তি-যুদ্ধে এখন অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে গুয়ামের আদিবাসী চামোরো জনগোষ্ঠী।

১৬৬৮ সালে প্রথম গুয়াম নামে এই দ্বীপটিকে নামকরণ করে স্প্যানিশ মিশনারিগণ। এর তিরিশ বছরের মধ্যেই সেখানকার চামোরো জনগোষ্ঠীর সংখ্যা মাত্র দশ শতাংশে নেমে আসে। মূলত অজানা এক মহামারিতে মৃত্যু হয় বেশিরভাগ আদিবাসী চামোরো জনগোষ্ঠীর। প্রায় তিনশ বছর স্প্যানিশ কলোনির হিসেবে থাকার পর ১৮৯৮ সালে স্প্যানিশ-আমেরিকা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমেরিকার দখলে চলে যায় গুয়াম। বর্তমানে সেখানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও রয়েছে। গুয়ামের অধিবাসীরা আমেরিকার বাসিন্দা হিসেবে বিবেচিত হলেও সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে তারা মার্কিনিদের থেকে অনেকটাই আলাদা।-স্মিথ সোনিয়ান ম্যাগ

Back to top button