জাতীয়

গারো তরুণী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিতঃ সাত দিনের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত ২৫ শে অক্টোবর ঢাকার বাড্ডা এলাকায় গারো তরুণী ধর্ষিত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস), ঢাকা মহানগর শাখা এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগর শাখা। ২৮ শে অক্টোবর বিকেল চারটায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চানচিয়ার সমন্বয়ক আন্তনী রেমা, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উন্নয়ন দালবত, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কাকন বিশ্বাস, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, বাগাছাস ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অনুপ হাদিমাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বাগাছাস ঢাকা মহানগরের সভাপতি অলীক মৃ।
চানচিয়ার সমন্বয়ক আন্তনী রেমা বলেন, খুন ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাওয়ার পেছনে প্রশাসনের দুর্বলতা, সরকারের সদিচ্ছার অভাবই দায়ী। নারীর নিরাপত্তা, জনগণের জীবন ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কখনো প্রতিষ্ঠিত হবেনা। খুন-ধর্ষণের উপর ভিত্তি করে সত্যিকারের উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কাকন বিশ্বাস বলেন, বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় খুন-ধর্ষণের বিচারের জন্য সংগ্রাম না করলে বিচার পাওয়া যাবেনা। সব জায়গায় এখন নারীরা অনিরাপদ, নারীরা নিরাপদ শুধুমাত্র প্রতিরোধের মিছিলে। সেই প্রতিরোধের মিছিলের দ্বারাই নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এখন এই রাষ্ট্র শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের, জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ জারাখ দ্রং
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ জারাখ দ্রং
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উন্নয়ন দালবত বলেন, বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামোকে অনবরত আঘাত করা ছাড়া এই অনিয়ম থেকে মুক্তির আর কোন পথ খোলা নেই। এই ক্ষমতাকে ভেঙ্গে নতুন পরম্পরা সৃষ্টি করতে পারলেই আমরা এই নিপীড়ন থেকে মুক্ত হব।
চলমান খুন ধর্ষনের ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারীদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ। সরকারের উচিৎ নিজেদের এ ব্যর্থতা স্বীকার করে এই বিচারের দায়িত্ব ছাত্রদের হাতে তোলে দেওয়া। ছাত্ররা যুগে যুগে প্রমাণ করে এসেছে, তারা দায়িত্ব নিতে জানে।
মামলা নিতে পুলিশের তালবাহানার ঘটনা জানিয়ে বাগাছাস; ঢাকা মহানগরের সভাপতি অলীক মৃ বলেন, পুলিশকে জনগণের বন্ধু বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে জনগণের সাথে পুলিশের কোন ধরনের বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক নেই। প্রশাসন আজকে রাজনৈতিক দলগুলোর শক্তির কাছে জিম্মি।
তিনি আরও বলেন, গারো তরুণীর ধর্ষক রুবেল বাড্ডা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। পুলিশ প্রশাসনও ধর্ষক রুবেলকে গ্রেপ্তার করতে ভয় পায়, প্রশাসন কি কারণে ভয় পায় সেটা জনগণ জানে।
সমাবেশ শেষে সমাবেশের সভাপতি অলীক মৃ সাত দিনের আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। এই সাতদিনের মধ্যে ধর্ষক রুবেলকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা না হলে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন; (বাগাছাস), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, চানচিয়াসহ অন্যান্য প্রগতিশীল সংগঠন যৌথভাবে আগামী ৮ই নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও করবে।
গত ২৫ অক্টোবর আনুমানিক বিকাল ৪টায় বাগদত্তা স্বামীর মেস থেকে ফেরার পথে উত্তর বাড্ডার হাচেন উদ্দিন রোডে মো: রুবেল (২৭) নামের এক দুর্বৃত্ত কর্তৃক ধর্ষণের এই ঘটনা ঘটে।
থানা রোডের গলিতে তাদের ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত পথ আটকে ছেলে ও মেয়েকে আলাদা করে ছেলের কাছ থেকে টাকা পয়সা, মোবাইল ও ডেবিট কার্ড কেড়ে নিয়ে হুমকী দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়েটিকে মো: রুবেল তার কয়েকজন সহযোগীর সহযোগিতায় সেখানকার একটি রিক্সা গ্যারেজে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় গত ২৮শে অক্টোবর বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Back to top button