আঞ্চলিক সংবাদ

গাইবন্ধায় পুলিশের বাধা অতিক্রম করে সাঁওতালদের অবস্থান কর্মসূচি

পথে পথে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গতকাল বুধবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সাঁওতালরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার ও সম্পত্তি ফেরতসহ সাত দফা দাবিতে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও গাইবান্ধার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জনউদ্যোগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

গতকাল সকালে তির-ধনুক নিয়ে সাঁওতাল ও বাঙালিরা গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লি থেকে বাসে করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাগদা বাজারে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সাঁওতাল ও বাঙালিরা বিচ্ছিন্নভাবে গাইবান্ধায় যেতে থাকলে পথে পথে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

পুলিশের বাধার মুখেও তিন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি গাইবান্ধা শহরের রেলগেট এলাকায় সমবেত হয়। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের রাস্তার পাশে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক সমাবেশস্থলে এলে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহসভাপতি ফিলিমিন বাক্সে ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী।

এ সময় সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, জনউদ্যোগের সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জেলা সিপিবির সহসাধারণ সম্পাদক মুরাদজ্জামান রব্বানী প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পুলিশের এ রকম আচরণ কখনো কাম্য নয়। সাঁওতাল হত্যার বিচার ও পৈতৃক সম্পত্তি ফেরত চাওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। সেই লক্ষ্যেই সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, গত বছরের ৬ নভেম্বর তিনজন সাঁওতাল হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ১০ মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাঁওতালদের দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাঁরা বলেন, সাঁওতালদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগকারী চিহ্নিত পুলিশ কর্মকর্তাসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

গত বছরের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রংপুর চিনিকলের জমির আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিরবিদ্ধ নয়জন এবং গুলিবিদ্ধ হন চারজন। এ সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন সাঁওতাল নিহত হয়।

পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান বলেন, পুলিশ বাধা দেয়নি। তাদের তির-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল করতে নিষেধ করেছে।

Back to top button