জাতীয়

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর না হলে কর্তৃত্ববাদ চেপে বসেঃ আনিসুজ্জামান

মহান মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পর গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর সামরিক ও স্বৈরাচারি শাসকরা রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এমনকি সংবিধানেও কুঠারাঘাত করে। রাষ্ট্রধর্ম প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতা একসাথে চলতে পারে না। কার্যকর জাতীয় সংসদ ও বিরোধীদল ছাড়া গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে না। নির্বাচন বর্জন, সংসদ বর্জন এবং জাতীয় সংসদকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপ না দেয়ায় রাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গসমূহ যেমন বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ আজও জনবান্ধব হয়ে ওঠেনি। তাই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর না হলে কর্তৃত্ববাদী শাসন চেপে বসে।জাতীয় সাপ্তাহিক ‘নতুন কথা’র ৪০তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত “মুক্তিযুদ্ধ ও গণমাধ্যম” শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান প্রধান অতিথির ভাষণে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, বঙ্গবন্ধুই বলেছেন, ধর্মের নামে রাজনীতি করা যাবে না। অথচ আজ হেফাজতের পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে সমাজে প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক ভাবধারা শেকড় গেড়ে বসছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে নসাৎ করে মুক্তিযুুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। সম্প্রতি গণমাধ্যমও যেন তাদের সাহস হারিয়ে ফেলছে। তারা সরকার ও মালিকপক্ষের নিকট নতজানু হয়ে পড়ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, আজকের বাস্তবতায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জায়গায় গণমাধ্যম আছে কিনা সেটাও তাদের দেখতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে সাইবার নিরাপত্তা জরুরী। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু ধারা রয়েছে যা অপপ্রয়োগ করা সহজ এবং হচ্ছেও তাই। ফলে গণমাধ্যম নিজেদের ওপর এক ধরনের ‘সেল্ফ সেন্সর’ আরোপ করে রেখেছে। আজ আমরা ঋণখেলাপীদের টাকার অঙ্কটা জানি, কিন্তু তাদের নাম জানি না। গণমাধ্যম সামাজিক সাম্য, সমতা, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্য, দুর্নীতি, নিপীড়ন রোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

মাহমুদুল হাসান মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক মাহবুব আলম,অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নতুন কথা সম্পাদক হাজেরা সুলতানা।

Back to top button