খ্যাতিমান চারণ কবি রমনী মোহন গেংহুলীর প্রয়ান
আইপিনিউজ ডেক্স(ঢাকা): পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা সমাজের অন্যতম খ্যাতিমান চারণ কবি গেংখুলি রমণী মোহন চাকমা গত ১০ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার পরলোক গমন করেছেন। ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ তাঁর শেষকৃত্য বাংলাদেশ- মায়ানমার -ভারত এর ত্রিসীমানা ঠেগায় সম্পাদন করা হয়েছে বলে জুম ঈসথেটিক কাউন্সিল(জাক) সূত্রে জানা গেছে।
আগামী ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এই শিল্পীর পারলৌকিক সদগতির উদ্দেশ্যে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে জাক এর প্রতিনিধি হয়ে সিনিয়র সদস্য শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতি কর্মী ও নাট্যজন ঝিমিত ঝিমিত চাকমা ও সঙ্গীত শিল্পী সুব্রত চাকমা যোগদান করবেন বলেও জানা যায়।
চাকমা আদিবাসীদের সঙ্গীতের অন্যতম একটি স্বতন্ত্র ধারা হলো গেংখুলি। এই গেংখুলি যাঁরা গেয়ে থাকের তাঁদেরকে ‘গেংহুল্লে’ নামেও ডাকা হয়। চাকমা সমাজে প্রায় লুপ্ত এই গেংখুলিদের মধ্যে তিনিই ছিলেন বয়জেষ্ঠ্য। বরেণ্য এই চাকমা লোকসংগীত শিল্পীর প্রকৃত নাম বরণ চান চাকমা। তাঁর গায়কীতে মুগ্ধ হয়ে চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় তাঁকে ‘‘রমণী মোহন শিল্পী” বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়িতে খ্যাতিমান এই গেংখুলি ১৯৩৬ সালের ২০ এপ্রিল জন্ম গ্রহণ করেন। ১৪ বছর বয়স থেকে তিনি গুণী সাধক কান্দারা চাকমার কাছে তালিম নেন। তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ‘গেংখুলি’ পরিবেশন করেছেন। দেশের বাইরে ভারত এবং মায়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে তাঁর সংগীতের যাদুতে মুগ্ধ করেছেন। একজন ভিন্ন ধারার সংগীতের সাধক হিসেবে শিল্পবোদ্ধা এবং অনুরাগীদের কাছে তিনি অনেক আগে থেকেই ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। বান্দরবান ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার পঁচিশ বছর পূর্তি (১৯৮৮-২০১৩) উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত রজত জয়ন্তী উৎসবে ১০ মে ২০১৪ তারিখে আয়োজিত ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকসাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৩’ সালে তাঁকে ‘আজীবন সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
এই সঙ্গীত শিল্পীর প্রয়ানে শোক জানাচ্ছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিল্পী,সাহিত্যিক, কবি ও লেখকদের অনেকেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এই শিল্পীর প্রতি। এছাড়া জুম ঈসথেটিক কাউন্সিল(জাক)ও এই শিল্পীর প্রয়ানে শোক জানিয়েছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা নিবেদন করেছে।