আঞ্চলিক সংবাদ

খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটনের নামে ভূমি দখলের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলায় পর্যটনের নামে ৭০০ একর ভূমি দখলের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।এছাড়াও উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল,ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম,রাখাইন স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন সংহতি জানিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিতিশ চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক মিন্টু চাকমা,পলিটেকনিক শাখার সভাপতি মিটুল চাকমা(বিশাল),ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের ভ্যালেন্টিনা ত্রিপুরা,অর্পন ত্রিপুরা,বিএমএসসির পক্ষ থেকে কেসিংহ্লা মারমা, পাহাড়ী শ্রমিক কল্যাণ ফোরামের সুমন চাকমা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস হোড়, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অনুপম চাকমা এবং সমাবেশে সঞ্চালনা করেন মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মিলন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস শোষণ বঞ্চণার ইতিহাস, এই ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস। এখানে রয়েছে ১০ ভাষাভাষী মানুষের ১৪ টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। সেই ব্রিটিশ শাসনের পূর্ব হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত তারা সেখানে তাদের ঐতিহ্যগত এবং প্রথাগত ভূমির অধিকার ভোগ করে আসছে। তাই সেই ভূমির সাথে তাদের রয়েছে গভীর সম্পর্ক আর ভালোবাসা। কিন্তু অত্যন্ত দূঃখের বিষয় সরকার পর্যটনের নামে ভূমি দখল করে আদিবাসীদেরকে তাদের চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ীদের নিশ্চিনহ করার চেষ্ঠা চালাচ্ছে শাসকগোষ্ঠী। খাগড়াছড়ির আলুটিলার সেই জায়গাটিতে ৩০০টির অধিক আদিবাসী পরিবার রয়েছে,যারা স্মরণাতীতকাল থেকে সেখানে বসবাস করে আসতেছে। কিন্তু সরকার সেইসব আদিবাসী পরিবারকে পর্যটনের নামে উচ্ছেদ করে তাদের প্রথাগত যে ভূমি অধিকার, সেই ভূমি অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে বক্তারা মনে করেন।

বক্তারা আরো বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই যুগের সশস্ত্র সংগ্রামের আমরা একটি চুক্তি পেয়েছি,কিন্তু আজকে ১৯ টি পেরিয়ে গেলেও এখনো চুক্তির অধিকাংশ ধারাই অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়ে গেছে। তাই বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন আইন কার্যকর করার দাবি জানান।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়, মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গায় পর্যটনের নামে ভূমি অধিগ্রহণ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রধান করা হয়।

Back to top button