কাপ্তাই হ্রদ পাহাড়ি মানুষের অশ্রুজলঃ দীপায়ন খীসা
কর্ণফুলী নদী। ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহাড় থেকে নেমে এসে পার্বত্য রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এ নদীর মোহনায় বাংলাদেশের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর। আর উজানে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে রয়েছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প; যা কাপ্তাই বাঁধ নামে অধিক পরিচিত। খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীপ্রবাহে রাঙ্গামাটি জেলার (তৎকালীন অবিভক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম) কাপ্তাইয়ে ১৯৫৭-এর প্রথম দিকে পাকিস্তান সরকার বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। অবশ্য এ জল বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম স্থানটি ছিল রাঙ্গামাটির সুবলংয়ের সন্নিকটে। যেখানে কর্ণফুলী দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বেশ সংকুচিত। এখানে বাঁধ দিলে ভারতের মিজোরামের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে ভারত সরকার আপাত্তি জানায়। সে কারণে আরো ভাটির দিকে এসে কাপ্তাইয়ে বাঁধের পরিকল্পনা করা হয়। এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেয়ার পর পাহাড়ের মানুষ নানা শঙ্কায় দিন কাটাতে শুরু করে। তখন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ডিগ্রির ছাত্র। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করতে পেরে মানবেন্দ্র লারমা বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করেন। পাহাড়ের ছাত্রসমাজ এ বাঁধ নির্মাণ বন্ধ রাখার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে। পাকিস্তান সরকার ১৯৬২ সালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে নিবর্তনমূলক আইনে গ্রেফতার করে। পাহাড়িদের জনমতকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান সরকার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে থাকে। ১৯৬৩ সালের দিকে এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। কাপ্তাই বাঁধের কারণে ডুবে যায় পাহাড়ের সবচেয়ে উর্বর জমিগুলো। উচ্ছেদের শিকার হয় লাখো মানুষ। পাহাড়ের জনপদে নেমে আসে এক মানবিক বিপর্যয়। পানিতে তলিয়ে যায় অনেক জনপদ, নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় একটি সভ্যতা। তিল তিল করে গড়ে ওঠা পার্বত্য এলাকার পাহাড়ি মানুষের জীবন জলের নিচে হারিয়ে যায়। প্রায় ৫৪ হাজার একর উর্বর ফসলি জমি বাঁধের ফলে সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদে নিমজ্জিত হয়ে যায়। রাঙ্গামাটির মূল শহরটি পানিতে ডুবে যায়। ডুবে যায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জন্মস্থান মাওরুম গ্রামটিও। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার আলো ছড়ানো অন্যতম আলোকিত জনপদ ছিল এ মাওরুম গ্রাম। ভিটেমাটি, গবাদি পশু, ফসলি মাঠ, সাজানো জীবনের সবকিছুই পানির তলদেশে চলে যায়। সর্বস্ব হারানো নিঃস্ব মানুষ নতুন জীবনের সন্ধানে পাহাড়ের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। কাজলং, চেঙে আর মেঅনী নদীর উপত্যকায় উদ্বাস্তু মানুষ আবার নতুন জীবনের পত্তন ঘটায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে উদ্বাস্তু মানুষের ঢল সীমান্ত পার হয়ে ভারতেও আশ্রয় নেয়। ৫০ হাজারের অধিক শরণার্থীর নতুন ঠিকানা হয় ভারতের অরণ্যসংকুল অরুণাচলে।
চাকমা ভাষায় কর্ণফুলীর নাম হচ্ছে বড়গাঙ। এ বড়গাঙকে ঘিরে পত্তন হয়েছিল চাকমা রাজা হরিশচন্দ্রের নতুন রাজধানী। ব্রিটিশদের চাপে রাঙ্গুনিয়া থেকে চাকমা রাজা হরিশচন্দ্র তার রাজধানী রাঙ্গামাটিতে স্থানান্তর করতে বাধ্য হন। ১৮০০ সালের শেষ দিকে রাজা হরিশচন্দ্র রাঙ্গামাটিতে বড়গাঙের তীরে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। কাপ্তাই বাঁধের অথৈ জলরাশিতে এ রাজপ্রাসাদও তলিয়ে যায়। কাপ্তাই বাঁধের এ সময়টি চাকমাদের কাছে বড় পরং নামে পরিচিত। পরং মানে হচ্ছে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর হওয়া। বর্তমান চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় বাঁধের সময়কালীন জন্ম নিয়েছিলেন। সেজন্য তার ডাকনাম হচ্ছে গুদুরাজ। চাকমা ভাষায় বাঁধকে গদা বলা হয়। গদা দেয়ার সময় দেবাশীষ রায়ের জন্ম হয়েছিল বিধায় তাকে মা-বাবা আদর করে গুদু নামে ডাকতেন। মূলত কাপ্তাই বাঁধের উদ্বাস্তুরা সরকারি ক্ষতিপূরণও পাননি। ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের জীবন নিয়ে পালানোটাই ছিল প্রধান কাজ। গহিন অরণ্যে, দুর্গম পাহাড়ে কিংবা ভিন দেশে নতুন জীবন শুরু করার জীবনসংগ্রামে নিয়োজিত অধিকাংশ মানুষের কাছে সরকারি ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করার সময়টুকুও ছিল না। এ অনাহূত পানি নিয়ে সে সময়ের তরুণ চাকমা কবি ফেলাজিয়া চাকমা তার ‘কিজিঙৎ পূগ বেল’ কবিতায় লিখেছেন, ‘এই পানি পানি নয়, এ পানি চোঘ পানি তরমর, এ দেজর লাগ লাগ মানজ্যার দুক্য সাগর/… / আ! যা এল তর মর কোন এক কালে/ এচ্যা বেগ পানিত তলে।’ বাংলায় ‘এই পানি পনি নয়, এই পানি চোখের পানি তোমার আমার, এই দেশের লাখো লাখো মানুষের দুঃখের সাগর/ … / আহ! যা ছিল তোমার আমার কোনো এক কালে/ আজ সব গেল পানির তলে।’
এভাবে সবকিছু হঠাৎ করেই পানির তলদেশে তলিয়ে যেতে দেখে অসহায় মানুষ নতুন জীবনের সন্ধান করতে থাকে। আবার ধীরে ধীরে জেগে ওঠে মানুষ। তবে এ কাপ্তাই বাঁধ পাহাড়িদের জনজীবনে এক বিরাট ক্ষত তৈরি করে। এ ক্ষতের উপসমে পাহাড়ে নতুন জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছে রাজন্যবর্গ ও অভিজাত সামন্তদের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে পাহাড়ের নিপীড়িত মানুষ তরুণ নেতৃত্বের ডাকে সাড়া দিতে শুরু করে। বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে মানবেন্দ্র লারমার কারাবরণে পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন এক মেরুকরণ ঘটাতে শুরু করে। শিক্ষিত তরুণদের কাছে পৃথিবীব্যাপী পটপরিবর্তনগুলোর ঢেউ লাগতে শুরু করে। শ্রমজীবী মানুষ ও নিপীড়িত জাতিগুলোর মুক্তিসংগ্রামে পাহাড়ের তরুণরা দীক্ষা নিতে শুরু করে। আর চিরাচরিত সামন্ত প্রথা ভাঙতে শুরু করে। পাহাড়ে ধীরে ধীরে শিক্ষিত চাকুরে মধ্যবিত্তের জন্ম নিতে দেখা যায়। কৃষিজমি সংকুচিত হওয়ার ফলে বিশেষ করে চাকমারা লেখাপড়ার মাধ্যমে চাকরি করার দিকে মনোযোগী হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, কাপ্তাই বাঁধে শুধু পাহাড়িরা উদ্বাস্তু হয়েছে তা নয়, পুরনো বস্তি বাঙালিরাও বাঁধের কারণে উদ্বাস্তু হয়। পাহাড়ের জনজীবনে কাপ্তাই বাঁধের প্রভাব আরো দৃশ্যমান হয় ১৯৭০-পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে। এ নির্বাচনে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। অতঃপর ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলে তৎকালীন গণপরিষদে লারমা পাহাড়ের জুম্ম জনগণের আত্মপরিচয়ের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। কাপ্তাই বাঁধের মাধ্যমে জুম্ম জনগণকে ডুবিয়ে দেয়ার প্রতিবাদী আওয়াজ গণপরিষদের কক্ষে ভয়হীন চিত্তে পাহাড়ের জাতিগুলোর কথা মানবেন্দ্র লারমার কণ্ঠে ধ্বনিত হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ের রাজনীতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭২ সালে। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি আসনেই জনসংহতি সমিতি জয়ী হয়। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর আর দক্ষিণ থেকে জয়লাভ করেন চাইথোয়াই রোয়াজা। এবার মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের জন্য বিশেষ শাসনের দাবি উত্থাপন করা শুরু করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর জনসংহতি সমিতি পাহাড়ে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান হয়।
কর্ণফুলী নদীর বুকে বাঁধ নির্মাণ না হলে পাহাড়ের ইতিহাসগাথা অন্যভাবে রচিত হতে পারত। লাখো মানুষকে উচ্ছেদ করে যে বাঁধ, সে বাঁধের ট্র্যাজেডি এখনো পাহাড়ের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে। ভারতের অরুণাচলে আশ্রয়গ্রহণকারী কাপ্তাই বাঁধের উদ্বাস্তুরা এখনো নাগরিকত্ব পায়নি। দেশহীন মানুষ হিসেবে তারা সেখানে বাস করছে। কাপ্তাই বাঁধের ক্ষত এখনো তাদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। যে বিদ্যুতের কারণে কাপ্তাই বাঁধ, সে বিদ্যুতের আলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরে এখনো পৌঁছেনি। কাপ্তাইয়ের সন্নিকটে মগবান-জীবতলীর পাহাড়ি মানুষ এ সময়ে এসেও হারিকেন আর কেরোসিনের বাতি দিয়েই জীবন কাটাচ্ছে। ১৯৭৫-পরবর্তী পাহাড়ে সশস্ত্র যুদ্ধের সময়কালীন এ কাপ্তাই হ্রদের উদ্বাস্তু মানুষ আবারো ভারতে শরণার্থীর জীবন কাটিয়েছে বহু বছর। ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর নতুন জীবনের স্বপ্নে দেশে ফেরত আসে এ মানুষজন। কিন্তু রাষ্ট্র আবারো তাদের সঙ্গে প্রতারণা করল। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা নেই বললেই চলে। তাই চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে আছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন তার কার্যক্রম শুরু করতে না পারার কারণে পাহাড়িরা বেদখল হয়ে যাওয়া জায়গাজমি ফেরত পায়নি। বরং সম্প্রতি খাগড়াছড়ি জেলার বাবুছড়ায় বিজিবি জোন সদর দফতর নির্মাণকে কেন্দ্র করে ২১টি পরিবার তাদের ভিটেমাটি থেকে পুনরায় উচ্ছেদ হয়েছে। এ উচ্ছেদ হওয়া ২১টি পরিবার কাপ্তাই বাঁধের কারণে প্রথম দফায় উচ্ছেদ হয়। রাঙ্গামাটির প্রস্তাবিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। সেখানকার পাহাড়ি জনগণও কাপ্তাই বাঁধের উদ্বাস্তু। বস্তুত কাপ্তাই বাঁধের কারণে পাহাড়ে বসতভিটা, স্থাপনা তৈরি করা ও কৃষি উপযোগী জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। তাই কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিলে পাহাড়িরা বারবার ভূমি থেকে উত্খাত হয়ে যায়। কাপ্তাই বাঁধকেন্দ্রিক যে জীবন, সে জীবনও সংকটপূর্ণ। যেহেতু হ্রদটি কৃত্রিম, তাই কাপ্তাই হ্রদের জলসীমা স্থির থাকে না। হ্রদের পানি কমলে সেখানে এক ফসলি কৃষি চাষ করা যায়। এ জমিগুলোকে জলে ভাসা জমি হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ জলে ভাসা জমিগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন। অনেক সময় কোনোরূপ ঘোষণা ছাড়াই পানির উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়। ফলে পাকা ধান, অনেক সময় আধাপাকা ধান হঠাৎ করেই হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। আবার এমন সময় পানির উচ্চতা কমানো হয় যখন আবাদের মৌসুম শেষ হয়ে যায়। তাই কাপ্তাই হ্রদের জলসীমা নির্ধারণ করাটাও বর্তমান সময়ে অন্যতম করণীয় হতে পারে। কিন্তু জলসীমা নির্ধারণের বিষয় সরকারের কোনো সদিচ্ছা পরিলক্ষিত হয়নি।
কাপ্তাই বাঁধের আরেকটি দিক আছে। বাঁধের উজানে পাহাড়ি জনপদ ডোবানো হয়েছে। আর কর্ণফুলীর ভাটিতে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। বাঁধ দেয়ার ফলে কর্ণফুলীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়েছে। ভাটির নাব্য তাই হ্রাস পেতে বাধ্য। আমরা জানি, কর্ণফুলী নদীর ভাটিতে এখন নাব্য বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। কাপ্তাই বাঁধ শুধু উজানের মানুষের ক্ষতি করেছে তা নয়; দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরের জন্য কর্ণফুলীর মোহনায় যে নাব্য দরকার, সেটারও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে এ বাঁধ। এছাড়া হ্রদের তলদেশও দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ে অস্বাভাবিকভাবে জনসংখ্যা ঘনত্ব বৃদ্ধির কারণে প্রাকৃতিক প্রতিবেশের ওপর চাপ বাড়ছে। হ্রদকেন্দ্রিক নদ-নদীগুলোর উজানের নাব্যও কমে আসতে শুরু করেছে। যেহেতু হ্রদটি পাহাড় পরিবেষ্টিত, তাই প্রতিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হ্রদের পানিতে প্রায়ই পাহাড় ধসে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। সে কারণে হ্রদের আয়তনও কমে আসছে। আর অল্প বৃষ্টিতেই জল উপচে পড়ছে। তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে হ্রদের পানির ধারণক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত নদী শাসনের কারণে হয়তো কাপ্তাই হ্রদটি শুধু পাহাড়িদের কাছে নয়; অদূর ভবিষ্যতে সারা দেশের জন্য মরণফাঁদও হতে পারে। কাপ্তাই বাঁধের কারণে সৃষ্ট যে হ্রদ, সে হ্রদে নিমজ্জিত যে সভ্যতা, তার দীর্ঘশ্বাস লাঘবে রাষ্ট্রকে আরো আন্তরিক হতে হবে। কারণ এ হ্রদের পানি নিছক নীলাভ পানি নয়, এ পানি সেখানকার পাহাড়ি মানুষের চোখের পানি। রাষ্ট্রকে মনে রাখতে হবে, এ অশ্রুজল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে শুধু কাঁদিয়ে যায় না; বিদ্রোহীও করে তোলে।
দীপায়ন খীসা |লেখক ও আদিবাসী সংগঠক
(২০১৫-০৬-২৯ ইং তারিখে বনিকবার্তায় প্রকাশিত)