কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ আর নেই
দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ আর নেই। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । শিল্পীর একাধিক ঘনিষ্ঠজন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গীতিকার ও সাংবাদিক কবির বকুল জানান, ‘শনিবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থবোধ করেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ। বারিধারস্থ নিজ বাসাতেই ছিলেন তিনি। তবে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। এ সময় তার পাশে ছিলেন স্বামী রহমত উল্লাহ।’
আজ রোববার বাদ জোহর বারিধারা স্থানীয় মসজিদে জানাজা শেষে আর্মি গ্রেভইয়ার্ডে এই সংগীতশিল্পীকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে পারিবারিক সূত্র।
১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করা এ শিল্পী ১০ বছর বয়স থেকেই গান শুরু করেন। প্রায় সেই বয়সেই গান করেন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন আর বেতারে। ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেছিলেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ। ১৯৬৪ সালে টিভিতে প্রথম গান করেন। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচি টিভিসহ উর্দু ছবিতেও অনেক গান করেছেন এই শিল্পী। গান শিখেছেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের কাছে।
‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে আমায় বল’, ‘সাগরের তীর থেকে’, ‘খোলা জানালা’, ‘পারি না ভুলে যেতে’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’, ‘আমি তো আমার গল্প বলেছি’—এ রকম অসংখ্য গান দিয়ে বাংলাদেশের অগণিত শ্রোতার মন জয় করেছেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ। তার গাওয়া দেশাত্মবোধক গান আজও জনপ্রিয়।
বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। এর মধ্যে আনোয়ার পারভেজের সুর করা দুটি গান, খান আতাউর রহমান, আবদুল লতিফের সুরে দুটি ভিন্ন গান রয়েছে।
সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ।