উছোমং মারমার মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে পিসিপির সমাবেশ
২রা আগস্ট ২০১৬ ইং তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখা কর্তৃক বান্দরবানের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জননেতা উছোমং মারমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক অমর শান্তি চাকমার সঞ্চালনায় এবং সংগঠনটির সভাপতি ক্যারিংটন চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা, সহ-সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানজ্যোতি চাকমা। সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়ন(গাসু)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিপুল চিরান, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি চঞ্চনা চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সুমন মারমা প্রমুখ। বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বান্দরবান জেলার সভাপতি উছোমং মারমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, সরকারের প্রতি বিশ্বাস রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের সাথে পার্বত্য চুক্তিতে উপনিত হয়। কিন্তু চুক্তির ১৮ বছর অতিক্রান্ত হবার পরেও চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়ন না করে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দেওয়ার অপচেষ্টা হিসেবে বান্দরবানের জনসংহতি সমিতির নেতা কর্মীদের উপড় ষড়যন্ত্রমূলক মামলা, হামলা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, গত ১৩ জুন রাজভিলায় আওয়ামীলীগের সদস্য মংপু মারমার অপহরণ ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়িত করে জনসংহতি সমিতি ও সমিতির সহযোগী সংগঠনের ৩৮ জন সদস্যের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় উছোমং মারমাসহ জনসংহতি সমিতির ১০ জন সদস্য হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন লাভ করেন। জামিন পেয়ে গতকাল উছোমং মারমা তাঁর বাড়িতে পৌঁছলে আরেকটি নতুন চাঁদাবাজি মামলায় জড়িত করে তাঁকে গভীর রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে। জানা যায় যে, আজ ১ আগস্ট মো: আব্দুল করিম নামে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের জনৈক আওয়ামীলীগ নেতা কর্তৃক জামিন লাভ করা জনসংহতি সমিতির ৭ জন সদস্যসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে বান্দরবান সদর থানায় তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়। এটা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, উক্ত ষড়যন্ত্রমূলক চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করার পূর্বেই উছোমং মারমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুসারে মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারী দলের ভরাডুবি অন্যদিকে জনসংহতি সমিতির বিপুল বিজয় প্রমাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ সরকারী দলের প্রতি আস্থাহীন। জনসংহতি সমিতির প্রতি জনসাধারণের এ অকুন্ঠ সমর্থনে ভীত হয়েই প্রশাসন, শাসক গোষ্ঠী জেএসএসের নেতাকর্মীদের উপড় এ সকল ষড়যন্ত্রমূলক মামলা, হামলা করে যাচ্ছে। পার্বত্য এলাকার আপামর জনসাধারণের কাছে জনসংহতি সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুনড়ব করা এবং জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দেওয়ার যে পরিকল্পনা শাসক গোষ্ঠী হাতে নিয়েছে তা জুম্ম জনগণ বুঝতে পেরেছে। বক্তারা অনতিবিলম্বে প্রশাসনের এ সকল ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করা না হলে জুম্ম জনগণ তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে বলেও উল্লেখ করেন। সমাবেশ থেকে নিমেড়বাক্ত দাবিনামা উত্থাপন করা হয়- ১। অনতিবিলম্বে জেএসএসের বান্দরবান জেলার সভাপতি উছোমং মারমাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ২। জেএসএসের নেতাদের উপড় ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। ৩। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।