জাতীয়

আলুটিলায় পর্যটনের নামে আদিবাসী উচ্ছেদের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ৩০ আগস্ট ২০১৬ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি জেলার সংগ্রামী সদস্য সৌখিন চাকমা। উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি বাচ্চু চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি টোয়েন চাকমা, জেএসএস রাঙামাটি জেলার শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরৎ জ্যোতি চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উদয়ন ত্রিপুরা প্রমূখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, খাগড়াছড়ি জেলার খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার তিনটি মৌজার ৬৯৯.৯৮ একর জমিতে যুগ যুগ ধরে বসবাসকারী জুম্মদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে আলুটিলা বিশেষ পর্যটন জোন স্থাপন করতে চলেছে। এটি চুক্তি ও জুম্মদের প্রথাগত ভুমি অধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন। চুক্তি, প্রথাগত ও আন্তর্জাতিক আইনে উল্লেখ রয়েছে- আদিবাসী সম্মতি ব্যতিত আদিবাসীদের নিজ চিরায়ত ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা যায় না, তাদের চিরায়ত ভূমি অধিগ্রহন কিংবা বেদখল করতে পারে না। বক্তাগন জুম্মদের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের উদ্যোগকে জোর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়।

বক্তারা বলেন, গত ৮০-৯০ দশকে খাগড়াছড়ি বন বিভাগ আলুটিলায় প্রায় ১০০০.০০ (এক হাজার) একর জুম্মদের চিয়ারত ভূমি বেদখল করে পরিবেশ বিরোধী সেগুন বাগান সৃজন করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সল্ট প্রকল্পের নামে ৩০০ একর, খাগড়াছড়ি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি ৭.০০ একর এবং কতিপয় বাঙালী জুম্মদের চিরায়ত ভূমি বেদখল করে বাগান সৃজন করেছে। এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক- এর যোগসাজসে বহু অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। অবৈধভাবে সৃজিত এসব বাগান বাতিল ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে মূল মালিকের নিকট ফেরত প্রদানের দাবী জানায়।
DSC_2772 copy
বক্তাগণ বলেন, খাগড়াছড়ি জেলার আলুটিলা এলাকা জুম্মদের একটি এতিহ্যবাহী অঞ্চল। এই এলাকায় জুম্ম আদিবাসীরা শত শত বছর ধরে বসবাস করে আসছে। এই আলুটিলা এলাকায় বিশেষ পর্যটন জোন স্থাপন করা হলে এলাকার বহু গ্রাম উচ্ছেদ হবে এবং হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বক্তাগণ অনতিবিলম্বে আলুটিলা এলাকায় বিশেষ পর্যটন জোন স্থাপনের নামে জুম্মদের চিরায়ত ভূমি বেদখলের উদ্যোগ বাতিল করার জোর দাবী জানাচ্ছে। সরকার যদি বিশেষ পর্যটন জোন স্থাপন বাতিল না করে তাহলে বৃহত্তর কমৃসূচী গ্রহণ করা হবে এবং এর কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম আবারো অশান্ত হয়ে উঠে তার জন্য সরকার দায়ী থাকবে।

বিক্ষোভ মিছিলটি সকাল ১০ টায় জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা অফিস থেকে শুরু হয়ে বনরূপা হয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। জেলা প্রমাসক অফিস প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ সঞ্চলনার দায়িত্বে ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সদস্য রূপক চাকমা।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ টিটো চাকমা

Back to top button