আন্তর্জাতিক নারী দিবসে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ মাতালো সাঁওতাল নারীরা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নারীরা নিজস্ব ঐতিহ্যে নেচে-গেয়ে আনন্দের সাথে উদযাপন করলেন আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বনের ব্যানারে র্যালিতে অংশ নেয়া সাঁওতাল নারীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নাচ ও গানের মাধ্যমে পুরো সময়টা মাতিয়ে রাখে। র্যালি শেষে উপজেলা ভবনের সামনে সাঁওতাল নারীদের নাচের সাথে উপস্থিত সবাই অংশগ্রহণ করলে সাঁওতাল-বাঙালিদের উৎসবমুখর মিলনমেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানস্থল।
পরে উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে নারী দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেবুননেছা, গোবিন্দগঞ্জ জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারপার্সন শাহানা আকতার, গোবিন্দগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহমুদ খান, সাবেক সভাপতি জাহিদুর প্রধান টুকু, অবলম্বনের প্রজেক্ট অফিসার রুমিলা হেমব্রম, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু প্রমুখ।
আলোচনায় সভায় বক্তারা বলেন- সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে সৃজনশীল ও উন্নয়নমূলক সব কর্মকান্ডে পুরুষের পাশাপাশি নারীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠারও দাবি জানান তারা।
আদিবাসী নেত্রীরা বলেন, আদিবাসী নারীরা নারী হিসেবে এবং আদিবাসী হওয়ার জন্য তারা উভয় ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়। আদিবাসী নারীরা ধর্ষন, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। উচ্ছেদ হচ্ছে ভূমি থেকেও। আদিবাসী ও বাঙালি নারী কৃষিমজুরেরা হচ্ছেন মজুরি বৈষম্যের শিকার। মানবাধিকার, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গভেদে সবার জন্য সমান অধিকার। এ অবস্থা নিরসনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। তারা আদিবাসী নারীদের উন্নয়নের জন্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার দাবী করেন।