অন্যান্য

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ঐক্য ন্যাপ মহিলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা

৯ই মার্চ, ২০১৭ ইং ঐক্য ন্যাপ মহিলা শাখার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সেগুনবাগিচাস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐক্য ন্যাপ মহিলা শাখার আহ্বায়ক অলিজা হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ঐক্য ন্যাপ-এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ঐক্য ন্যাপ-নারী শাখার সদস্য সচিব লাইলা খালেদার সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আসাদুল্লাহ তারেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঐক্যন্যাপের সহ-সভাপতি অ্যাড. এস. এম. এ. সবুর, সভাপতি ম-লীর সদস্য; আব্দুল মোনায়েম নেহেরু, হারিছ উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ, ঐক্যন্যাপ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ ভুইয়া, মহানগর কমিটির আহবায়ক ইঞ্জি. সাহাবুদ্দিন আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক আক্তার জাহান মালিক, জুয়েলা জেবুন নেসা খান, লুৎফুন নাহার শিমুল (বনশ্রী), আদিবাসী নারী নেত্রী রাখী ¤্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, মানবাধিকার কর্মী সারা আলম, যুব নেতা প্রনব কুমার বিশ্বাস, ছাত্রনেতা মাসুদ আলমসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
বক্তাগণ নারী দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বর্তমান প্রেক্ষিতে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোকপাত করেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী যে প্রতি ক্ষেত্রেই বঞ্চনা, বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এ থেকে উত্তরণের উপায় বের করার প্রতি সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানানো হয়। বক্তাগণ বলেন যে, মুক্তি শুধু নারীর জন্য নয় বরং নারী মুক্তিই পুরুষকে মুত্তির প্রকৃত প্রসাদ বিলায়। নারীর প্রতি সহিংস নয়, নারীদের উপর আধিপত্য বিস্তার বা খবরদারিত্বে পুরুষত্বের মহিমা বাড়ে না। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। নারী অধিকার বাস্তবায়ন ও সুরক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে সরকারকে আরো বেশি আন্তরিক ও সংবেদনশীল হতে বলেন বক্তারা। শুধু জামাত বা মোল্লা নয় হেফাজত নামধারী তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের ফতোয়া আমলে নিয়ে সরকার যদি ভোটের রাজনীতিতে অংকের ভুল হিসাব কষে তবে খেসারত দিতে হবে অনেক। নারী শক্তির সক্ষমতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বক্তাগণ ৩০% নারীর অধিকারের প্রতি সরকারকে কর্ণপাত করার তাগিদ দেন। ০৩% মোল্লা, হেফাজতের কথায় সরকার যদি নতজানু হয়ে জনস্বার্থ বিরোধী কাজ সম্পাদনে তৎপর থাকে তবে নারীরাও একত্রিত হয়ে তাদের দাবি অধিকার ছিনিয়ে আনতে বাধ্য হবে। পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক চেতনার বিষ বুনে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া অসম্ভব। হেফাজতি শিক্ষার অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র হরণ, প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, লেখক, কবিদের নির্বাসনে পাঠানো দেশকে পাকিস্তানী জামানায় নিয়ে যাবার নামান্তর। তাই রাষ্ট্রকে মানুষের বসবাসের উপযোগী মানবিক, অসাম্প্রদায়িক, সাহসী, সচেতন ও উগ্যোগী হতে হবে। বক্তাগণ নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি নি¤েœাক্ত দাবিগুলো পেশ করেন। (১)সমতার ভিত্তিতে সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর অধিকার দিতে হবে। (২)বিশেষ ব্যবস্থা বাতিল করে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ বছর রাখতে হবে। (৩) বেতন বাড়ানোরসহ সকল গার্মেন্টস শ্রমিকের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। (৪) নারী শিশু ও প্রতিবন্ধিদের জন্য বাসে ৯ সীটের জায়গায় ১৫ সীট রিজার্ভ রাখতে হবে এবং অফিস গামী নারীদের যাতায়াতের জন্য নারী বাসের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে হবে। (৫)সরকারি অফিসের মত সকল বেসরকারী অফিস আদালতে ৬ মাসের মাতৃত্ব কালীন ছুটি বাধ্যতা মূলক করতে হবে। (৬)নারী কর্মচারীদের জন্য সরকারী তথ্যাবধানে পর্যাপ্ত বেবী সিটিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। (৭) চাকুরীজীবী নারীদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত হোস্টেলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। (৮)ঘরে কর্মরত নারীদের কর্ম ঘন্টা মূল্যায়ন করতে হবে।

Back to top button