অন্যান্য

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বলয়ের বাইরে বাম বিকল্প গড়ার আহ্বান জানিয়েছে সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, দুর্নীতি-লুটপাট-স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের দুর্নীতি, ভয় ভীতির অবসান ঘটিয়ে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি বলয়ের বাইরে বাম নীতিনিষ্ঠ শক্তির বিকল্প শক্তি সমাবেশ ঘটাতে হবে। এ কাজে সিপিবি নেতা কর্মিদের প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। উন্নয়নের গালভরা বুলির আড়ালে দেশে যে পর্বত পরিমাণ বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশ আজ মহালুটেরাদের খপ্পরে। এরা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে ও ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছে,সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নানাভাবে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।

তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বলেন, রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দুর্নীতিমুক্ত ভাবে নিত্যপণ্যের বাফার স্টক গড়ে তোলা ছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছে অনুনয়-বিনয় করে সমস্যার সমাধান হবে না।
গতকাল ৭ এপ্রিল ২০২২ বিকেল ৪টায় লোয়ার যশোর রোডস্থ পার্টির কার্যালয়ে সিপিবি খুলনা জেলা সভাপতি ডাঃ মনোজ দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক এস এ রশীদ,শেখ আব্দুল হান্নান, এড. রুহুল আমিন, চিত্ত রঞ্জন গোলদার, কিশোর রায়, অশোক সরকার, মিজানুর রহমান বাবু, এড. নিত্যানন্দ ঢালী, সুখেন রায়, কিংশুক রায়,গাজী আফজাল, আব্দুল হালিম, শাহিনা আক্তার, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, নিতাই পাল, সোহরাব হোসেন, আব্দুর রহমান মোল্লা, হুমায়ুন কবির, অধ্যাপক সঞ্জয়সাহা, অশোক বিশ্বাস, নীরজ রায়, মিনু পাল, দিপু মন্ডল, পারভীন আক্তার শিলা,মাহফুজুর রহামান মুকুল, আফজাল হোসেন রাজু,রিয়াসাত আলী রিয়াজ,ছাত্রনেতা সৌরভ সমাদ্দার, সৌমিত্র সৌরভ প্রমুখ।

রুহিন হোসেন প্রিন্স সরকারের অপ্রয়োজনীয় মেগাপ্রকল্প, রুপপুর পারমাণু বিদ্যূত কেন্দ্র, রামপাল কয়লা প্রকল্পসহ অপ্রয়োজনীয় কয়লা প্রকল্পের সমালোচনা করে বলেন,এসব প্রকল্পে অহেতুক খরচ করা হয়েছে। আবার এসব প্রকল্পের সময় ও বরাদ্দ বাড়ছে। এর ফলে দেশের মানুষের মাথাপিছু ঋণের বোঝাও বাড়ছে। অন্যদিকে ঋণ খেলাপী, লুটেরাদের ঋণ মওকুফ ও বিদেশে অর্থ পাচার বাড়ছে। এসব হচ্ছে সরাকারের নীতির কারণে। তিনি বলেন, দেশের অগ্রগতি অন্যতম তিন কারিগর হলেন, গ্রামের কৃষক-ক্ষেতমজুর, শহরের গার্মেন্টস-সহ শ্রমজীবী মানুষ ,আর বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিক। এদের আয়ে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির কথা উচ্চারিত হলেও অসৎ আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী আর অসৎ রাজনীতিক এই ত্রয়ী মিলে যে দুবৃত্তায়িত রাজনীতির ধারা তৈরী করেছে, তারাই এই সমৃদ্ধির সুফল ভোগ করছে।

তিনি বলেন, “সরকারের মন্ত্রী, নেতা-পাতি নেতারা কথায় কথায় বলেন মানুষ না খেয়ে নেই। আমি জানতে চাই খাওয়ার সংজ্ঞা কী ? নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে অথচ সাধারণমানুষের উপার্জন বাড়েনি বরং কমেছে। তাই অনেক মানুষ আধাপেটা খেয়ে বেঁচে আছে।এদের সাথে সরকার উপহাস করছে। তিনি খুলনা শিল্পাঞ্চলের ধ্বংসের জন্য সরকারি নীতিকে দায়ী করে এ অঞ্চলে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা, পাটকল চালু, আধুনিকায়ন ও পাওনা পরিশোধের দাবি জানান। তিনি ঈদের আগে সব শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, বকেয়া, বোনাস পরিশোধের দাবি জানান।

তিনি দক্ষিণাঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্বাস্তুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশের শ্রমজীবী মানুষের সারা বছরের কাজের নিশ্চয়তা দাবি করেন।

তিনি ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে গণসংগ্রাম বেগবান করতে আগামী ১৫ থেকে ১৭ এপ্রিল সারা দেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে গণঅবস্থান বিক্ষোভ সফল করার আহ্বান জানান।

সভার শুরুতে সিপিবি খুলনা জেলা কমিটি ও বিভিন্ন শাখা কমিটির পক্ষ থেকে সিপিবির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান হয়।

Back to top button