আন্তর্জাতিক

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে পাহাড়ি গ্রামে আগুনের কথা তুলবেন সিনেটর রিয়ানন

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার লংগদুতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠির বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রিন পার্টির সিনেটর লি রিয়ানন।
মঙ্গলবার ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তিনি এই ঘোষণা দেন।

‘চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস ইনডিজেনাস জুম্ম অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া’র উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর, মানবাধিকার কর্মী, সংস্কৃতি কর্মী, লেখক, সাংবাদিকসহ প্রায় ৭০জন বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশি।

গত ১ জুন খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল (কৃষি গবেষণা এলাকা সংলগ্ন) এলাকায় রাঙামাটির লংগদু সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নের লাশ পাওয়া যায়। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন।

এর জের ধরে পরদিন সকালে নয়নের লাশ নিয়ে মিছিল থেকে লংগদু উপজেলা সদরে পাহাড়িদের কয়েকটি গ্রামে হামলা ও কয়েকশ বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লংগদু উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

সমাবেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বক্তব্য দেন কবিতা চাকমা, অভিলাষ ত্রিপুরা, কাজল বড়ুয়া, গসিরাম রেমা, কুলুত্তম চাকমা, তনু মুরং, বিনোতা ধামাই, বিশ্বজিত, সানু মারমা, সুফিয়া হিল, অজয় চাকমা এবং পুলক রেমা।

বক্তারা লংগদু ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন ও মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দেশের ‘পাহাড়ি আদিবাসী’সহ সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানান ।

তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনসহ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন দাবি করেন ।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া আর্কিটেক্ট অ্যাসোসিয়েশন, অস্ট্রেলিয়ান গারো সোসাইটি, এশিয়া ইনডিজেনাস পিপলস প্যাক্ট, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্ক সমাবেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।

ক্যানবেরার বৃহত্তর বাংলা ভাষাভাষিদের মধ্যে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন কবি শাহাদাত মানিক, অজয় কর, নিউটন মুহূরী, ওয়ালিজা ফারহানা এবংসৌরভ আচার্য।

আদিবাসীদের উপর জাতিগত নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে সংহতি জানাতে সমাবেশে সিনেটর লি রিয়ানন ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ বিষয়ক ছায়া প্রতিমন্ত্রী ও অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির সিনেটর লিসা সিং, সিনেটর সিং ও সিনেটর রিয়ানন পার্বত্য চট্টগ্রামে এই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তারা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে এর পূর্ণ তদন্তের অনুরোধ জানান।

পাশাপাশি ২০ বছরের পুরানো পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উপর চলমান ‘সব বৈষম্য’ দূর করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানান ।

সিনেটর রিয়ানন বাংলাদেশের আদিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

প্রতিবাদ শেষে ১০৭ জন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপিপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
তথ্যসূত্রঃ বিডিনিউজ২৪.কম

Back to top button