আঞ্চলিক সংবাদ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে এক হাজং আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টায় ন্যায় বিচার দাবি

গত ৯ নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর থানাধীন ১ নং বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের বান্দ্রা গ্রামে জোরপূর্বক এ ধর্ষণের চেষ্টা চালায় একই গ্রামের শাহাদাত্‌ মিয়া (২১)  পিতা মৃত সিদ্দিক মিয়া এবং রফিক মিয়া (৪০)-পিতা মৃত রাশিদ মিয়া নামে দু’জন বাঙালি লোক। ঘটনার দিন হাজং মেয়েটি (১৬) যথারীতি সন্ধ্যার পূর্ব মুহুর্ত সাড়ে ৫টার সময় তাদের ঘরে পালিত হাঁসগুলোকে বাড়ি আনতে গেলে বাড়ির পেছনের ধানক্ষেতে ওতপেতে থাকা গ্রামের উক্ত দু’জন তাকে মুখ বেঁধে জোর করে বান্দ্রা পাহাড়ী ঝর্ণার ছড়ার পাশের ক্ষেতে নিয়ে কিশোরীর ওপর এ সহিংসতা চালায়। এসময় মেয়েটি তাদের হাতের কবল থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মুখের বাঁধন খুলে গেলে আর্তচিত্‌কার করতে থাকে।  এসময় তাকে খুঁজতে থাকা মা ও প্রতিবেশী লোকজন মেয়েটির চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে শাহাদাত ও রফিক মিয়া মেয়েটিকে ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে কিশোরী মেয়েটি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সে ঘুমের ঘোরে এখন হঠাৎ চিৎকার দিয়ে ওঠে বলে জানায় ভিকটিম পরিবার। তাছাড়া মেয়েটি আগে থেকেই কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী প্রকৃতির।

ঘটনার দিন রাতে অভিযুক্ত আসামীরা স্থানীয় মেম্বার নিয়ে গ্রাম্য সালিশ ডেকে অভিযুক্ত আসামীদের কিছু জরিমানা ধরে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করে এবং এখন পর্যন্ত ভিকটিম পরিবারকে আসামীর লোকেরা নানা হুমকি-ধামকী দিয়ে আসছে এবং মীমাংসার জন্য অর্থের প্রলোভন দেখাচ্ছে। এলাকায় আদিবাসী নারীদের ওপর বার বার এ ধরনের সহিসংতার ঘটনা ঘটে চলেছে এবং প্রতিবারই এভাবে গ্রাম্য সালিশ ডেকে মীমাংসা করা হয়। কিন্তু অবশেষে, এ ঘটনায়  ভিকটিম ও ভিকটিম পরিবার গত ১১ নভেম্বর মধ্যনগর থানায় যায় এবং ভিকটিমের মা বাদী হয়ে দু’জন অভিযুক্ত আসামীর নামে অভিযোগ দায়ের করে আসে। সে অভিযোগের সূত্র ধরে ১২ নভেম্বরে একজন আসামী রফিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ন্যায় বিচার দাবি করছে বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন, হাজং ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

জাতীয় হাজং সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হাজং বলেন,  ঘটনাটি শুনে জানলাম হাজং কিশোরী মেয়েটি সেদিন নিজেকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল এবং ঠিক সময়ে প্রতিবেশীরা উপস্থিত হয়েছিল বলেই সে গণধর্ষণের হাত থেকে একটুর জন্য রক্ষা পেয়েছিল। এদেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের জন্যও ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। উক্ত ঘটনাটি দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক যেন দৃষ্কৃতকারীরা এসব অপকর্ম করার আর সাহস না পায়।

বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের নেতা অন্তর হাজং বলেন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আমরা প্রতিবাদ আন্দোলন করে যাব এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

Back to top button