অন্যান্য

ম্রো আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

বান্দরবানে অবৈধ দখলের কবলে ম্রো আদিবাসীদের প্রথাগত জুম ভূমিসহ শত শত বছরের সংরক্ষিত পাড়া বন, শ্মশান, সৃজিত ফলজ বনজ বাগান রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন নয়টি পাড়ার ম্রো আদিবাসীর নেতারা।
গতকাল বুধবার দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলামের মাধ্যমে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন চিম্বুকে বসবাসরত ম্রো আদিবাসী নেতারা।

উক্ত স্মারক লিপিতে বলা হয় যে, সম্প্রতি বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের ৪৭ কিলোমিটারে অবস্থিত কাপ্রু ম্রোপাড়া হয়ে ৫২ কিলোমিটারের জীবননগর পর্যন্ত আট শতাধিক একর ম্রোদের প্রথাগত ভূমি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জোর দখল করার অপচেষ্টা করছে সিকদার গ্রুপ (আর অ্যান্ড আর হোল্ডিংস)। এরই মধ্যে ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড ও খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। বিশাল পরিমাণ এ জায়গার মধ্যে স্মরণাতীতকাল ধরে অনগ্রসর ম্রো জাতিসত্তার মানুষরা বাস করে আসছে। এতে উচ্ছেদের মুখে কাপ্রুপাড়া, দোলাপাড়া, এরাপাড়া এবং উচ্ছেদ ঝুঁকিতে মারকিন, লংবাইতং, মেনসিং, রিয়ামানাই ও মিনরিং ম্রো পাড়া রয়েছে।

উক্ত স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, এসব পাড়াবাসীর শত শত বছরের সংরক্ষিত প্রাকৃতিক পাড়া বন, শশ্মানভূমি, জুম ভূমিসহ সৃজিত ফলজ বনজ বাগানের বেশিরভাগ ইতিমধ্যে দখল করা হয়েছে। এসব ভূমি বেদখল হলে আটটি পাড়ার প্রায় দেড়শ পরিবার নিজেদের ভূমি ও পাড়া হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এসব বিষয়সহ দখল করা ভূমি নিয়ে কোনো কথা না বলতে প্রুপটির পক্ষের লোকরা কারবারিদের (পাড়া প্রধান) ও পাড়াবাসীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

ভুক্তভোগী ম্রো আদিবাসীদের একটি মৌজার হেডম্যান, একজন ওয়ার্ড মেম্বারসহ ১৩১ জন স্বাক্ষরিত উক্ত স্মারকলিপি বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিজ কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্মারকলিপি পেয়েছেন। তবে সেটিকে কী লেখা আছে তা তিনি এখনো পড়ে দেখেননি।
উল্লেখ্য বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি এবং ভূমিদস্যু কর্তৃক অব্যাহতভাবে ভূমি দখলের সবচেয়ে বেশি শিকার ম্রো আদিবাসীরা। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় থেকে শুরু করে নীলগীরি, নীলাচল সহ বিভিন্ন পর্যটন ও রিসোর্ট স্থাপনের পূর্বে এইসব ভূমির মালিকদের অধিকাংশই এই ম্রো জনগোষ্ঠীর।

Back to top button