মাশরাফি-নাফিস-তামিম ও নাজমুল করোনায় আক্রান্ত

বাংলাদেশের ক্রিকেটে হুট করেই করোনায় হানা দিয়েছে। একদিন একের পর এক দু:সংবাদ আসছে। প্রথমে নাফিস ইকবাল, দুপুরে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সন্ধ্যায় খবর এলো নাজমুল ইসলাম অপুরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর।
কদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মাশরাফি। শরীরে করোনাভাইরাসের কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠায় পরীক্ষা করান। শনিবার পরীক্ষার রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে । নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি সংক্রমণের শুরু থেকেই এলাকার জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার নড়াইল যেতে হয়েছে তাকে। এখন তিনি নিজেই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত। সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে মাশরাফি লিখেছেন, ‘আজকে আমার রেজাল্ট COVID-19 পজিটিভ এসেছে। সবাই আমার জন্যে দোয়া করবেন যাতে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। আমি বর্তমানে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়ে যাচ্ছি এবং প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ মেনে চলছি।’ সবাইকে সতর্ক করে মাশরাফি আরও বলেছেন, ‘আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের সবাইকে এখন আরো সতর্ক হতে হবে। সবাই যেন ঘর থেকে বিনা প্রয়োজনে বের না হই। করোনা নিয়ে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।’
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের বড় ভাই বাংলাদেশ টেস্ট ও ওয়ানডে দলের সাবেক ওপেনিং ব্যাটসম্যান নাফিস ইকবাল। তামিম ঢাকায় অবস্থান করলেও নাফিস চট্টগ্রামে কাজীর দেউড়ির বাসায় পরিবারসহ আছেন। নাফিসের সঙ্গেই থাকেন তাদের মা নুসরাত ইকবাল। শনিবার করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা গেছে নাফিসের পুরো পরিবারই করোনা আক্রান্ত। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র। নাফিস করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রথমে। পরে তার স্ত্রী, সন্তান ও মাসহ কাজের লোকদের করোনা টেস্ট পজিটিভ এসেছে। তবে তাদের কারোরই জ্বর ছাড়া অন্য উপসর্গ নেই। শারীরিক অবস্থা ভালো থাকায় বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। এই মুহূর্তে নাফিসের স্ত্রীর অবস্থা অনেকটাই ভালো।
নাজমুল গত সপ্তাহে ত্রাণ দিতে নরসিংদী গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পরই তার করোনা ধরা পড়েছে। নাজমুলের মাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নাজমুল সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘গত সপ্তাহে ত্রাণ দিতে নরসিংদী গিয়েছিলাম। ওখান থেকে আসার পর শরীর খারাপ লাগছিল। বুধবার করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। আজ দুপুরেই রেজাল্ট পেয়েছি, পজিটিভ। এখন বাসায় আইসোলেশনে আছি।’ করোনায় আক্রান্ত হলেও মানসিকভাবে শক্ত আছেন বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি স্পিনার, ‘আপাতত ঘরেই থাকবো। আমি দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে আছি। যখন ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছি তখনও পরিবার ছেড়ে আলাদা থেকেছি। এখন আবার এভাবেই থাকতে হবে। আশা করি সবার দোয়ায় সুস্থ হয়ে উঠবো।’
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ত্রাণ কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন নাজমুল হোসেন। নিজের এলাকা নারায়ণগঞ্জে ত্রাণ দেওয়া ছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অনেক জেলায় অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালও নাজমুলের মাধ্যমে অভাবী-অসচ্ছল মানুষদের সহযোগিতা করেছেন। অসহায়দের সহযোগিতা করতে গিয়ে নিজেই এখন মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত। যদিও এসব নিয়ে ভাবছেন না নাজমুল, ‘কীভাবে হয়েছে তা তো কেউ বলতে পারে না। মানুষের জন্য কাজ করতে আমি বাইরে গিয়েছিলাম। যদি ওখান থেকে হয়ে থাকে আমার কোনও আফসোস থাকবে না। আমি খুব সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখে এগিয়ে গিয়েছিলাম। এর বাইরে আর কিছু নয়।’
source: banglatribune.com