অন্যান্য

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে ব্লাস্ট

২৬ জুন ‘নির্যাতনের শিকার ব্যাক্তিদের প্রতি সমর্থনে’ আন্তর্জাতিক দিবসে ব্লাস্ট ‘নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠনের জোর দাবি জানিয়েছে।

ব্লাস্টের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্যাতনের ফলে কোন ব্যক্তির মৃত্যু, অঙ্গহানী বা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হলে তার বা তার পরিবারের উক্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠার কোন ব্যবস্থা বিদ্যমান আইনে নেই। আইনে নির্যাতনকারীর শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির জন্য কোন প্রতিকারের বিধান নেই। যদিও ব্যবস্থাপনার দূর্বলতার কারনে একজন ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার হন। ফলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণসহ অন্যান্য প্রতিকার প্রদান করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কারণ রাষ্ট্রের সংবিধান নিশ্চয়তা প্রদান করেছে যে, কোন ব্যক্তিতে যন্ত্রণা দেয়া যাবে না [অনুচ্ছেদ-৩৫(৫)]। ব্লাস্ট নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল গঠন এবং এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়নের জোর দাবি জানাচ্ছে।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এবং ব্লাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এড. জেড. আই খান বলেন, নির্যাতন মুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নির্যাতন ও নিবর্তনমূলক সকল প্রকার প্রয়োগের বিলুপ্তি। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন ব্যক্তির উপর যে কোন প্রকারের নির্যাতন রোধে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে নির্যাতনকারী ব্যক্তি সে যেই হোক না কেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে। ব্লাস্ট মনে করে বাংলাদেশের নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষার জন্য এধরণের একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত। তাছাড়া নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের যথোপযুক্ত চিকিৎসা সুনিশ্চিত করা ও ফরেনসিক সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রদানে চিকিৎকদেরকে ও এগিয়ে আসতে হবে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, এই বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মাত্র এ পাঁচ মাসে মোট ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন। উল্লেখ্য ২০১৩ সালে বাংলাদেশ “হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু (নিবারণ) আইন” পাশ করা হয় কিন্তু উক্ত আইনে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের বিধান ও ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া উক্ত আইনটি গত ২০১৩ সালের অক্টোবর এ পাশ হলেও প্রায় ৭ বছর পর গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ দেশে প্রথম এই আইনে দায়ের করা মামলার রায় হয়েছে। তাছাড়া হেফাজতে নির্যাতন প্রতিরোধে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছে যা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। ব্লাস্ট আশা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ এ সকল নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করবে।

Back to top button