নিজের বেতনে টাকা জমিয়ে অসহায় মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকা

লালথান পাংখোয়াঃ প্রতিবছর পাহাড়ে খাদ্য সংকট নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে তারই মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারী কবলে আরো অসহায় করে তুলেছে দূর্গম আদিবাসীরা। রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি উপজেলায় ফারুয়া ইউনিয়ন শুকনাছড়ি ত্রিপুরা গ্রামে ২২টি পরিবার মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকা এলিজাবেথ মেরিয়ান পাংখোয়া। গ্রামটি দুর্গম হওয়াতে তক্তানালা জায়গাতে ত্রাণ বিতরণ সম্পন্ন হয়।
আজ শুক্রবার সকালে বিলাইছড়ি গ্রাম থেকে ৩-৪ঘন্টা বোটে করে নিজেই অসহায় মানুষদের মাঝে এই ত্রাণ বিতরণ করেন।
খাদ্য সংকট হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে জানতে চাইলে শুকনাছড়ি গ্রাম প্রধান(কারবারি) অনুচন্দ্র ত্রিপুরা আইপিনিইজকে জানান, আমাদের গ্রামটি ২২ পরিবারের বসবাস। সবাই জুমচাষ ও দিনমুজরি উপর নির্ভর করে আমাদের সংসার চলে। প্রতিবছর জুম চাষ করছি কিন্তু বছরজুড়ে খাওয়ার মতো লাভাবান হয় না এইজন্য প্রতিবছর খাদ্য সংকট দেখা দেয়। গত ৫-৭বছর আগে জুম চাষ করে বছরজুড়ে নিজেদের খাওয়ার মতো পাই। পরিশ্রম ঠিকই করছি তাছাড়া কিন্তু এমন লাভবান হচ্ছেনা হয়তো মাটির উর্বরতাও কমে গেসে আগের থেকে এমন হতাশা নিঃস্বাস ফেলে বলেন। করোনা ভাইরাস দ্রুত সংক্রামণ থেকে বাঁচতে সাড়া দেশ জুড়ে লকডাউন কারণে আমাদের অর্থনৈতিক চাকা এখনো সচল করতে পারিনি। তাছাড়া জুমচাষ পদ্ধতিতে এই মৌসুমটা ধান রোপণ করা শেষ মাত্র তাই জুম থেকে কিচ্ছু আশা করতে পারিনি। আমাদের গ্রামে খাদ্য সংকট প্রতিবছর দেখা।আর আজকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদের যে দাড়িয়েছেন ওনাকে অসীম ধন্যবাদ জানাই।নিজের ২মাসে বেতন রেখে এমন মহৎ উদ্যেগী আমরা স্বাগতম জানাই আর্শীবাদ করি তার উপর।
এইদিকে শিক্ষিকা কাছে মতামত জানতে চাইলে তিনি আইপিনিউজকে বলেন,পাহাড়ের প্রান্তিক এলাকাগুলোতে খাদ্য সংকট নতুন ঘটনা নয়।আমি যতটুকু খোজ নিয়ে জানতে পারি এই গ্রামে খাদ্য সংকট আছে। তাই আমি নিজের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় নিজের বেতন জমিয়ে ২২পরিবার মতো উপহারটি দিয়েছি। আমার বিশ্বাস এই উপহার থেকে অন্তত ১০টি শিশু ২-৩দিন নিশ্চিন্তে খেতে পারবে আর আগামী দিনের স্কুলে যাওয়া স্বপ্ন দেখবে। আর অবশ্যই ধন্যবাদ দিব ‘বনফুলের জন্য জুম্ম তারুণ্যের ভালোবাসা’ তাদের উদ্যোগ কর্মহীন ও অহসায় মানুষদের পাশে যেভাবে দাড়িয়েছে তাদের অনুপ্রেরণায় একটু এগিয়ে আসতে চেষ্টা করেছি। আমি বর্তমানে বিলাইছড়ি উপজেলায় বেগেনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করছি। আমার একটাই আশা পাহাড়ের দূর্গম শিশুরাও একদিন সবাই স্কুলে যাবে।